1
|
পরবর্তী দু বছর ইস্রায়েল ও অরামের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল| |
2
|
তারপর তৃতীয় বছরের মাথায় যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন| |
3
|
এসময় আহাব তাঁর রাজকর্মচারীদের বললেন, “মনে আছে অরামের রাজা গিলিয়দের রামোত্ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন? রামোত্ ফিরিযে নেবার জন্য আমরা কিছু করিনি কেন? রামোত্ আমাদেরই থাকা উচিত্|” |
4
|
আহাব তখন রাজা যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি অরামের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে রামোতে য়োগ দেবেন?”যিহোশাফট বললেন, “অবশ্যই| আমার সেনাবাহিনী ও ঘোড়া আপনার সৈন্যদলের সঙ্গে য়োগ দেবার জন্য প্রস্তুত| |
5
|
কিন্তু প্রথমে এ বিষয়ে আমরা প্রভুর পরামর্শ নেব|” |
6
|
তখন আহাব ভাববাদীদের এক বৈঠক ডাকলেন| সেই বৈঠকে প্রায় |
7
|
কিন্তু যিহোশাফট তাদের বললেন, “এখানে কি প্রভুর অন্য কোন ভাববাদী উপস্থিত আছেন? তাহলে আমাদের তাঁকেও ঈশ্বরের মতামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা উচিত্|” |
8
|
রাজা আহাব বললেন, “য়িম্লের পুত্র মীখায় নামে ভাববাদী এখানে আছেন| আমি তাকে পছন্দ করি না কারণ যখনই সে প্রভুর কথা বলে কখনও আমার সম্পর্কে ভালো কোনো কথা বলে না|”যিহোশাফট বললেন, “মহারাজ আহাব আপনার মুখে একথা শোভা পায না|” |
9
|
তখন রাজা আহাব রাজকর্মচারীদের এক জনকে গিয়ে মীখায়কে খুঁজে বের করতে বললেন| |
10
|
সে সময় দুজন রাজাই তাঁদের রাজকীয পরিচ্ছদ পরেছিলেন| তাঁরা শমরিয়ায ঢোকার দরজার কাছে বিচার কক্ষে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন| সমস্ত ভাববাদীরা তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে ভাববাণী করছিলেন| |
11
|
সেখানে কনানীর পুত্র সিদিকিয় নামে এক ভাববাদী ছিলেন| সিদিকিয় কিছু লোহার শিং বানিয়ে আহাবকে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তুমি এই শিংগুলো ব্যবহার করলে ওদের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে|”‘ |
12
|
অন্য সমস্ত ভাববাদীরাও সিদিকিয়র কথার সঙ্গে একমত হলেন| ভাববাদীরা বললেন, “আপনার সেনাবাহিনীর এবার যাত্রা শুরু করা উচিত্| রামোতে প্রভুর সহায়তায আপনার সেনাবাহিনী অরামের সৈন্য দলের বিরুদ্ধে অবশ্যই জয়লাভ করবে|” |
13
|
এসব যখন হচ্ছিল, য়ে রাজকর্মচারী মীখায়ের খোঁজে গিয়েছিল সে মীখায়কে খুঁজে বের করে বলল, “দেখ সমস্ত ভাববাদীরাই বলেছেন মহারাজ যুদ্ধে জয়লাভ করবেন| আমি তোমাকে আগেই বলে দিচ্ছি, সে কথায় সায় দেওয়াই কিন্তু সব চেয়ে নিরাপদ|” |
14
|
কিন্তু মীখায় বলল, “না! আমি প্রতিজ্ঞা করেছি য়ে ঐশ্বরিক শক্তির বলে প্রভু আমায় দিয়ে যা বলাবেন আমি তাই বলব|” |
15
|
মীখায় তখন গিয়ে রাজা আহাবের সামনে দাঁড়ালে রাজা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “মীখায় আমি ও রাজা যিহোশাফট কি সম্মিলিত সেনাবাহিনী নিয়ে এখন রামোতে অরামের সৈন্যদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?”মীখায় বলল, “নিশ্চয়ই! আপনারা দুজনে গিয়ে এখন যুদ্ধ করলে, প্রভু আপনাদের জিততে সাহায্য করবেন|” |
16
|
আহাব বললেন, “মীখায় আপনি মোটেই দৈববাণী করছেন না| আপনি নিজের কথা বলছেন| আমাকে সত্যি কথা বলুন| আপনাকে কত বার বলবো? আপনি আমাকে প্রভুর অভিমত জানান|” |
17
|
অগত্যা মীখায় বলল, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, কি ঘটতে চলেছে| ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী পরিচালনার য়োগ্য লোকের অভাবে এক পাল মেষের মতো ছড়িয়ে পড়বে| প্রভু বলছেন, ‘এদের কোনো য়োগ্য সেনাপতি নেই| যুদ্ধ না করে এদের বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত্|”‘ |
18
|
আহাব তখন যিহোশাফটকে বললেন, “দেখলেন! আপনাকে আগেই বলেছিলাম| এই ভাববাদী আমার সম্পর্কে কখনও ভাল কথা বলে না| এমন কথা বলে যা আমি শুনতে চাই না|” |
19
|
কিন্তু মীখায় তখন প্রভুর অভিমত ব্যক্ত করে বলে চলেছে, “শোনো! আমি স্বচক্ষে প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখতে পাচ্ছি| দূতরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে| |
20
|
প্রভু বলেছেন, ‘তোমাদের দূতদের মধ্যে কেউ কি রাজা আহাবকে প্রলোভিত করতে পারবে? আমি চাই আহাব রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন| তাহলে ও নিহত হবে|’ দূতরা কি করবে সে বিষয়ে সহমত হতে পারলো না| |
21
|
শেষ পর্য়ন্ত এক দূত বলল, ‘আমি পারব রাজা আহাবকে প্রভাবিত করতে|’ |
22
|
প্রভু প্রশ্ন করলেন, ‘কিভাবে তুমি এই কাজ করবে?’ দূত উত্তর দিলেন, ‘আমি যাব ও সমস্ত ভাববাদীদের মুখে মিথ্যাবাদী আত্মা হব|’ তখন প্রভু বললনে, “উত্তম প্রস্তাব! যাও, গিয়ে রাজা আহাবের ওপর তোমার চাতুরী দেখাও| তুমি সফল হবে|”‘ |
23
|
মীখায় তার গল্প শেষ করে বলল, “তার মানে এখানেও ঠিক একই কাণ্ডখানাই ঘটেছে| প্রভু আপনার ভাববাদীদের দিয়ে আপনার কাছে মিথ্যে কথা বলিযেছেন| প্রভু নিজেই আপনার ওপর দুর্য়োগ ঘনিয়ে তোলার ব্যবস্থা করেছেন|” |
24
|
তখন ভাববাদী সিদিকিয় গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “তুমি কি সত্যিই বিশ্বাস করো য়ে ঈশ্বরের ক্ষমতা আমাকে ছেড়ে গেছে এবং প্রভু এখন তোমার মুখ দিয়ে কথা বলছেন?” |
25
|
বছর রাজত্ব করেছিলেন| যিহোশাফটের মা ছিলেন শিল্হির কন্যা অসূবা| |
26
|
তখন রাজা আহাব তাঁর এক কর্মচারীকে, মীখায়কে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, “ওকে গ্রেপ্তার করে আমোনের শাসনকর্তা রাজপুত্র যোয়াশের কাছে নিয়ে যাও| |
27
|
ওদের বললেন মীখায়কে কারাগারে বন্ধ করে রাখতে| জল আর রুটি ছাড়া য়েন ওকে আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়| আমি যুদ্ধ থেকে বাড়ি ফিরে না আসা পর্য়ন্ত ওকে এভাবে আটকে রেখো|” |
28
|
মীখায় তখন চিত্কার করে বলল, “আমি কি বলেছি তোমরা সকলেই শুনেছ| রাজা আহাব তুমি যদি যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফিরে আস তাহলে সবাই জানবে য়ে ঈশ্বর কখনোই আমার মধ্যে দিয়ে কথা বলেন নি|” |
29
|
তারপরে রাজা আহাব ও রাজা যিহোশাফট রামোতে অরামের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন| |
30
|
তারপর রাজা আহাব, রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হব| আমি এমন পোশাক পরবো যাতে বোঝা না যায় য়ে আমি রাজা| কিন্তু আপনি আপনার রাজকীয পোশাক পরুন, যাতে বোঝা যায় আপনি রাজা|” তারপর ইস্রায়েলের রাজা সাধারণ পোশাকে তিনি রাজা নন এভাবে যুদ্ধ শুরু করলেন| |
31
|
অরামের রাজার রথবাহিনীর |
32
|
যুদ্ধের সময় এই সব সেনাপতিরা রাজা যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন তিনিই বুঝি ইস্রায়েলের রাজা| তারা তখন যিহোশাফটকে হত্যা করতে গেলে তিনি চেঁচাতে শুরু করলেন| |
33
|
সেনাপতিরা দেখল তিনি রাজা আহাব নন, তাই তাঁরা তাঁকে হত্যা করল না| |
34
|
কিন্তু এক জন সেনা কোনো কিছু লক্ষ্য না করেই বাতাসে একটা তীর ছুঁড়লো, সেই তীর গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে লাগল| তীরটা একটা ছোট্ট জায়গায় বর্মের না ঢাকা অংশে গিয়ে লেগেছিল| রাজা আহাব তখন তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “আমার গায়ে তীর লেগেছে| যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রথ বের করে নিয়ে চল|” |
35
|
এদিকে দুই সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে য়েতে লাগল| রাজা আহাব তাঁর রথে কাত হয়ে পড়ে অরামের সেনাবাহিনীর দিকে দেখছিলেন| তাঁর রক্ত গড়িযে পড়ে রথের তলা ভিজে গিয়েছিল| বিকেলের দিকে তিনি মারা গেলেন| |
36
|
সূর্য়াস্তের সময় ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সবাইকে তাদের নিজেদের শহরে ফিরে য়েতে বলা হল| |
37
|
এই ভাবে রাজা আহাবের মৃত্যু হল| কিছু লোক তাঁর দেহ শমরিয়ায নিয়ে গেলেন, তাঁকে সেখানে কবর দেওয়া হল| |
38
|
লোকরা শমরিয়ায একটা ডোবায রথ থেকে আহাবের রক্ত ধুয়ে পরিষ্কার করল| গণিকারা সেই জলে স্নান করল| কুকুররাও রথ থেকে আহাবের রক্ত চেটে চেটে খেল| প্রভু য়ে রকম বলেছিলেন সমস্ত ঘটনা ঠিক সেভাবেই ঘটল| |
39
|
আহাব তাঁর শাসনকালে যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| এই গ্রন্থে আহাব কি ভাবে হাতির দাঁত দিয়ে তাঁর রাজপ্রাসাদ সাজিযে ছিলেন সে কথা ছাড়াও আহাবের বানানো শহরগুলির সম্পর্কেও লেখা আছে| |
40
|
আহাবের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল| তাঁর পুত্র অহসিয় তাঁর পরে রাজা হলেন| |
41
|
আহাবের ইস্রায়েলে রাজত্বের চতুর্থ বছরে যিহোশাফট যিহূদার রাজা হয়েছিলেন| যিহোশাফট ছিলেন আসার পুত্র| |
42
|
পঁযত্রিশ বছর পরে যিহূদার রাজা হবার পর তিনি জেরুশালেমে |
43
|
যিহোশাফট তাঁর পিতার মতো সত্ পথে থেকে প্রভুর সমস্ত নির্দেশ মেনে চলেছিলেন| তবে তিনি বিধর্মী মূর্ত্তিগুলির উচ্চস্থানগুলো ভাঙ্গেন নি| লোকরা সে সব জায়গায় পশু বলি ছাড়াও ধূপধূনো দিত| |
44
|
যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিলেন| |
45
|
যিহোশাফট খুবই সাহসী ছিলেন এবং অনেক যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন| তিনি যা যা করেছিলেন, ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে| |
46
|
য়ে সমস্ত নর-নারী গণিকাবৃত্তি অবলম্বন করত যিহোশাফট তাদের ধর্মস্থান ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করেছিলেন| এই সমস্ত নর-নারী তাঁর পিতা আসার রাজত্ব কালে ঐসব ধর্মস্থানে ছিল| |
47
|
এসময়ে ইদোমে কোনো রাজা ছিল না| যিহূদার রাজা সেখানকার শাসন কাজ চালনার জন্য একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে বেছে নিয়েছিলেন| |
48
|
রাজা যিহোশাফট কিছু মালবাহী জাহাজ বানিয়েছিলেন| তিনি চেয়েছিলেন এই সমস্ত জাহাজ ওফীরে গিয়ে সেখান থেকে সোনা নিয়ে আসবে| কিন্তু ওফীরে যাবার আগেই দেশেরই বন্দরে ইত্সিযোন-গেবরে এই সব জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়| |
49
|
ইস্রায়েলের রাজা অহসিয় তখন নিজের কিছু নাবিককে যিহোশাফটের জাহাজে তাঁর নাবিকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাঠাতে চেয়েছিলেন| কিন্তু যিহোশাফট অহসিয়ের এই সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিলেন| |
1 Kings 22:30 English Language Bible Words basic statistical display
COMING SOON ...