এই অংশে ছিল ধূপ জ্বালাবার জন্য সোনার বেদী ও চুক্তির সেই সিন্দুক, যার চারপাশ ছিল সোনার পাতে মোড়া৷ এর মধ্যে ছিল সোনার এক ঘটিতে মান্না ও হারোণের ছড়ি, য়ে ছড়ি মুকুলিত হয়েছিল; আর পাথরের সেই দুই ফলক যার ওপরনিয়ম চুক্তির শর্ত লেখা ছিল৷
সেই সিন্দুকের ওপর ছিল সোনার দুই করূব স্বর্গদূত যা ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ করত৷ তার দয়ার আসনটির ওপর ছায়া ফেলে থাকত৷ বর্তমানে আমরা এর খুঁটিনাটি বর্ণনা দিতে পারি না৷
কিন্তু মহাযাজক দ্বিতীয় কক্ষে কেবল একা বছরে একবার প্রবেশ করতেন; তিনি আবার রক্ত না নিয়ে প্রবেশ করতেন না৷ সেই রক্ত তিনি নিজের জন্য ও লোকদের দোষ-ত্রুটি ও অনিচ্ছাকৃত পাপের মার্জনার জন্য উত্সর্গ করতেন৷
ঐ উপহারগুলি কেবল খাদ্য়, পানীয় ও নানা প্রকার বাহ্যিক শুচি স্নানের গণ্ডীতে বাঁধা ছিল৷ সে সব বিধি-ব্যবস্থাগুলি ছিল কেবল মানুষের দেহ সম্বন্ধীয়৷ সেগুলি ব্যক্তির হৃদয় সম্বন্ধীয় বিষয় ছিল না৷ নতুন আদেশ না আসা পর্যন্ত ঈশ্বর তাঁর লোকদের এইসব নিয়ম অনুসরণ করতে দিয়েছিলেন৷
কিন্তু এখন মহাযাজকরূপে খ্রীষ্ট এসেছেন৷ আমরা এখন য়ে সব উত্তম বিষয় পেয়েছি, তিনি সেসবের মহাযাজক৷ পূর্বে যাজকরা তাঁবুর মতো কোন স্থানে সেবা করতেন, কিন্তু খ্রীষ্ট তেমনি করেন না৷ সেই তাঁবু থেকেও এক উত্তমস্থানে খ্রীষ্ট মহাযাজকরূপে সেবা করতেন৷ সেই স্থান সিদ্ধ, সেই স্থান মানুষের হাতে গড়া নয়, তা এই জগতের নয়৷
খ্রীষ্ট একবার চিরতরে সেই মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছেন৷ তিনি মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশের জন্য ছাগ বা বাছুরের রক্ত ব্যবহার করেন নি, কিন্তু তিনি একবার চিরতরে নিজের রক্ত নিয়ে মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছিলেন৷ খ্রীষ্ট সেখানে প্রবেশ করে আমাদের জন্য অনন্ত মুক্তি অর্জন করেছেন৷
তবে এটা কি ঠিক নয় য়ে খ্রীষ্টের রক্ত আরও কত অধিক কার্য়করী হতে পারে? অনন্তজীবি আত্মার মাধ্যমে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেকে বলিদান করলেন পরিপূর্ণ উত্সর্গরূপে৷ তাই খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের সমস্ত হৃদয়কে পাপ থেকে শুদ্ধ ও পবিত্র করবে, যাতে আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের উপাসনা করতে পারি৷
তাই খ্রীষ্ট তাঁর লোকদের জন্য ঈশ্বরের কাছে একনতুন চুক্তি উপস্থিত করেছেন৷ খ্রীষ্ট এই নতুন চুক্তি এনেছেন য়েন ঈশ্বরের আহুত লোকেরা তাঁর প্রতিশ্রুত সব আশীর্বাদ পেতে পারে৷ ঈশ্বরের লোকরা সেই আশীর্বাদ অনন্তকাল ভোগ করবে৷ তারা সেসবের অধিকারী হবে কারণ প্রথম চুক্তির সময়ে তারা য়ে পাপ করেছে সেই পাপ থেকে তাদের উদ্ধার করতে খ্রীষ্ট মৃত্যুবরণ করলেন৷
কারণ লোকদের কাছে মোশি বিধি-ব্যবস্থা থেকে সমস্ত আজ্ঞা পাঠ করে পরে তিনি জল ও রক্তবর্ণ মেষলোম আর একগোছা এসোবের ঘাস ব্যবহার করে গোবত্স ও ছাগদের রক্ত সেই পুস্তকটিতে ও লোকদের গায়ে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷
এই বিষয়গুলি ছিল আসল স্বর্গীয় বিষয়গুলির দৃষ্টান্ত, সেগুলিকে বলিদানের রক্তে শুচি করার প্রযোজন ছিল৷ কিন্তু যা প্রকৃত স্বর্গীয় বিষয় সেগুলি এর থেকে শ্রেষ্ঠতর বলিদানের দ্বারা শুচি হওয়া প্রযোজন৷
খ্রীষ্ট স্বর্গে মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছেন৷ মানুষের তৈরী কোন মহাপবিত্রস্থানে খ্রীষ্ট প্রবেশ করেন নি৷ পৃথিবীর তাঁবুর মহাপবিত্রস্থানে স্বর্গীয় স্থানের প্রতিচ্ছবি মাত্র; কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন, আর এখন আমাদের হয়ে তিনি ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷
মহাযাজক বছরে একবার বলির য়ে রক্ত নিয়ে মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেন তা তার নিজের নয়৷ কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন মহাযাজকদের উত্সর্গের মতো বারবার নিজেকে উত্সর্গ করার জন্য নয়৷
খ্রীষ্ট যদি তাই করতেন তবে জগত্ সৃষ্টির সময় থেকে তাঁকে বারবার প্রাণ দিতে হত৷ খ্রীষ্ট এসে একবার নিজেকে উত্সর্গ করেছেন৷ সেই একবারই চিরন্তন কাজের সমাপ্তি হয়েছে৷ জগতের অন্তিম কালেই খ্রীষ্ট নিজেকে বলিরূপে উত্সর্গ করে লোকদের পাপনাশ করতে এলেন৷
বহুলোকের পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য খ্রীষ্ট একবার নিজেকে উত্সর্গ করলেন; তিনি দ্বিতীয়বার দর্শন দেবেন, তখন পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য নয়, কিন্তু যাঁরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে তাদের পরিত্রাণ দিতে তিনি আসবেন৷