পিতরকে গ্রেপ্তার করে হেরোদ তাঁকে কারাগারে রাখলেন৷ তাঁকে পাহারা দেবার জন্য চারজন করে ষোল জন সৈনিককে নিযোগ করলেন৷ তিনি মনে করলেন নিস্তারপর্বের পরে পিতরকে জনসাধারণের কাছে বিচারের জন্য হাজির করবেন৷
সেই রাতে পিতর দুজন প্রহরারত সৈনিকের মাঝখানে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, দুটি শেকল দিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং সৈনিকরা ফটকে পাহারা দিচ্ছিল৷ হেরোদ ঠিক করেছিলেন য়ে পরদিন সকালে বিচারের জন্য পিতরকে কারাগারের বাইরে আনবেন৷
হঠাত্ প্রভুর এক দূত সেখানে এসে দাঁড়ালেন; আর কারাগারের মধ্যে একটা আলো ঝলসে উঠল৷ স্বর্গদূত পিতরের গায়ে মৃদু আঘাত দিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, ‘শিগ্গির ওঠ!’ তখন তাঁর দুহাতের শেকল খসে পড়ল৷
এরপর সেই স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, ‘পোশাক পর, আর পায়ে জুতো দাও৷’ পিতর সেই মত কাজ করলেন৷ তখন স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, ‘তোমার আলখাল্লাটি গায়ে দিয়ে আমাকে অনুসরণ কর৷’
স্বর্গদূত বের হলেন আর পিতর তাঁর পিছু পিছু বাইরে বেরিয়ে গেলেন; কিন্তু স্বর্গদূত যা করলেন তা য়ে বাস্তবে সত্য তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না৷ তিনি মনে করলেন হয়তো কোন দর্শন দেখছেন৷
তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় পাহারাদারদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন, আর য়েখান দিয়ে শহরে যাওয়া যায়, লোহার সেই বিরাট ফটকের কাছে এলেন৷ সেই ফটক তাঁদের জন্য নিজে থেকে খুলে গেল; আর তাঁরা সেখান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন৷ তাঁরা দুজনে একটা রাস্তার শেষ পর্যন্ত গেলেন, অমনি সেই স্বর্গদূত পিতরের কাছ থেকে হঠাত্ কোথায় মিলিয়ে গেলেন৷
তখন পিতর বুঝলেন কি ঘটেছে এবং বলে উঠলেন, ‘আমি নিশ্চয় জানলাম য়ে এসবই বাস্তব৷ প্রভু তাঁর দূতকে পাঠিয়েছিলেন; আর তিনিই হেরোদের ও য়ে ইহুদীরা নির্য়াতন দেখবে ভেবেছিল তাদের হাত থেকে আমায় উদ্ধার করেছেন৷’
এই কথা বুঝতে পেরে তিনি মরিয়মের বাড়ির দিকে রওনা দিলেন৷ এই মরিয়ম হলেন য়োহনের মা৷ এই য়োহনকে আবার মার্কও বলে৷ এদের বাড়িতে অনেকে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করছিলেন৷
তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিতে তাদেরকে চুপ করতে বললেন এবং প্রভু কিভাবে সেই কারাগার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে এনেছেন, সে কথা জানালেন৷ তিনি বললেন, ‘তোমরা যাকোবকে ও অন্যান্য ভাইয়েদের এই ঘটনার কথা জানাও৷’ পরে তিনি সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলেন৷
এরপর হেরোদ পিতরকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেন, কিন্তু তাঁকে না পেয়ে প্রহরীদের নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনি সেই প্রহরীদের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন৷ এরপর হেরোদ যিহূদা ছেড়ে কৈসরিয়া শহরে গিয়ে কিছুকাল সেখানে থাকলেন৷
হেরোদ সোরীয় ও সীদোনীয়ের লোকদের ওপর খুবই ক্রুদ্ধ ছিলেন৷ তারা দল বেঁধে হেরোদের সঙ্গে দেখা করতে এল৷ রাজার একান্ত সচিব ব্লান্তকে নিজেদের দলে টেনে তারা হেরোদকে শাস্তির জন্য অনুরোধ করল, কারণ তাদের দেশ রাজার দেশের ওপর খাদ্য়ের জন্য নির্ভরশীল ছিল৷
হেরোদ এই প্রশংসা কুড়ালেন, ঈশ্বরকে তাঁর প্রাপ্য় গৌরব দিলেন না৷ হঠাত্ প্রভুর এক দূত এসে হেরোদকে আঘাত করলে তিনি অসুস্থ হলেন৷ তাঁর শরীর কীটে খেয়ে ফেলল, ফলে তিনি মারা গেলেন৷