পরে আমি চক্ষু তুলিয়া দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, নদীর সম্মুখে এক মেষ দাঁড়াইয়া আছে, তাহার দুই শৃঙ্গ, এবং সেই দুই শৃঙ্গ উচ্চ, কিন্তু একটী অন্যটী অপেক্ষা অধিকতর উচ্চ; ও যেটী উচ্চতর, সেটী পশ্চাতে উৎপন্ন হইল।
আমি দেখিলাম, ঐ মেষ পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণদিকে ঢুঁস মারিল, তাহার সম্মুখে কোন জন্তু দাঁড়াইতে পারিল না, এবং তাহার হস্ত হইতে উদ্ধার করিতে পারে, এমন কেহ ছিল না, আর সে স্বেচ্ছামত কর্ম্ম করিত, আর আত্মগরিমা করিত।
আমি এই বিষয় বিবেচনা করিতেছিলাম, আর দেখ, পশ্চিমদিক্ হইতে এক ছাগ সমস্ত পৃথিবী পার হইয়া আসিল, ভূমি স্পর্শ করিল না; আর সেই ছাগের দুই চক্ষুর মধ্যস্থানে বিলক্ষণ একটা শৃঙ্গ ছিল।
আর আমি দেখিলাম, সে মেষের কাছে আসিল, এবং তাহার উপরে ক্রোধ উত্তেজিত হইল, মেষকে আঘাত করিল, ও তাহার দুই শৃঙ্গ ভাঙ্গিয়া ফেলিল, তাহার সম্মুখে দাঁড়াইবার শক্তি ঐ মেষের আর রহিল না; আর সে তাহাকে ভূমিতে ফেলিয়া পদতলে দলিতে লাগিল; তাহার হস্ত হইতে ঐ মেষটীকে উদ্ধার করে, এমন কেহ ছিল না।
পরে আমি এক পবিত্র ব্যক্তিকে কথা কহিতে শুনিলাম, এবং যিনি কথা কহিতেছিলেন, তাঁহাকে আর এক পবিত্র ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিলেন, সেই নিত্য নৈবেদ্যের অপহরণ, ও সেই ধ্বংসজনক অধর্ম্ম, দলিত হইবার জন্য ধর্ম্মধামের ও বাহিনীর সমর্পণ সম্বন্ধীয় দর্শন কত লোকের জন্য?
তাহাতে আমি যে স্থানে দাঁড়াইয়া ছিলাম, তিনি সেই স্থানের নিকটে আসিলেন; তিনি আসিলে আমি ত্রাসযুক্ত হইলাম, উপুড় হইয়া পড়িলাম; কিন্তু তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, বুঝিয়া লও, কারণ এই দর্শন শেষকাল-বিষয়ক।
আর তাহার ভগ্ন হওয়া, ও তৎপরিবর্ত্তে আর চারি শৃঙ্গ উৎপন্ন হওয়া, ইহার মর্ম্ম এই, সেই জাতি হইতে চারি রাজ্য উৎপন্ন হইবে, কিন্তু উহার ন্যায় পরাক্রম-বিশিষ্ট হইবে না।
সে বলে পরাক্রান্ত হইবে, কিন্তু নিজ বলে নহে, এবং সে আশ্চর্য্যরূপে বিনাশ করিবে; আর কৃতকার্য্য হইবে, কর্ম্ম সফল করিবে, এবং শক্তিমান্দিগকে ও পবিত্র প্রজাদিগকে বিনাশ করিবে।
তাহার কৌশল প্রযুক্ত সে আপন হস্তে চাতুরি সফল করিবে; সে মনে মনে আত্মগরিমা করিবে, ও নিশ্চিন্ত অবস্থাপন্ন অনেককে বিনষ্ট করিবে, এবং অধিপতিগণের অধিপতির বিরুদ্ধে দাঁড়াইবে, কিন্তু সে বিনা হস্তে ভগ্ন হইবে।