1
|
গিলিয়দ পরিবারগোষ্ঠীর একজন হচ্ছে যিপ্তহ| সে খুব শক্তিশালী য়োদ্ধা| কিন্তু সে গণিকার পুত্র| তার পিতার নাম ছিল গিলিয়দ| |
2
|
গিলিয়দের নিজের স্ত্রীর অনেকগুলো পুত্র| পুত্ররা বড় হয়ে যিপ্তহকে দেখতে পারত না| তারা তাকে শহর ছাড়া করল| তারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির এক কানাকড়িও পাবে না, কারণ তুমি আমাদের মাযের পেটের ভাই নও| তুমি অন্য নারীর সন্তান|” |
3
|
ভাইদের কথায় যিপ্তহ শহর ছেড়ে চলে গেল| সে টোব দেশে বাস করত| টোবে কিছু শক্তিশালী লোক যিপ্তহকে অনুসরণ করতে লাগল| |
4
|
কিছুদিন পরে অম্মোনরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে লাগল| |
5
|
গিলিয়দের নেতারা য়িপ্তহের কাছে গেল তাকে ফিরে আসার জন্য অনুনয় করতে| তারা যিপ্তহকে টোব ছেড়ে গিলিয়দে ফিরে আসতে বলল| |
6
|
নেতারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের কাছে এসে আমাদের নেতা হও| তোমার নেতৃত্বে আমরা অম্মোনদের সঙ্গে লড়াই করবো|” |
7
|
যিপ্তহ তাদের বলল, “তোমরাই তো আমাকে ভিটেছাড়া করেছিলে| তোমরা তো আমায় ঘৃণা কর| তাহলে এখন কেন আবার বিপদে পড়েছো বলে আমার কাছে এসেছ?” |
8
|
তারা বলল, “এই কারণেই আমরা তোমার কাছে এসেছি| দয়া করো| আমাদের মধ্যে তুমি এসো, অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাও| তুমিই গিলিয়দের অধিবাসীদের সেনাপতি হবে|” |
9
|
যিপ্তহ বলল, “বেশ, যদি তোমরা চাও যে আমি গিলিয়দে ফিরে আসি এবং অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি ভালো কথা| প্রভুর সহায়তায যদি আমি জিতি তাহলে আমিই হবো তোমাদের নতুন নেতা|” |
10
|
গিলিয়দের নেতারা বলল, “আমরা যে সব কথা বলেছি প্রভু সবই শুনছেন| আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তুমি যা করতে বলবে আমরা তাই করব|” |
11
|
অগত্যা যিপ্তহ তাদের সঙ্গে চলে গেল| তারা যিপ্তহকে তাদের নেতা ও সেনাপতি করে দিলে মিস্পা শহরে প্রভুর সামনে যিপ্তহ আর একবার তার কথাগুলো শুনিয়ে দিল| |
12
|
অম্মোনদের রাজার কাছে যিপ্তহ কয়েকজন বার্তাবাহক পাঠাল| বার্তাবাহকরা রাজার কাছে এই বার্তা শোনাল, “অম্মোনবাসী আর ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে সমস্যাটা কি? কেন তোমরা আমাদের দেশে যুদ্ধ করতে এসেছ?” |
13
|
রাজা তাদের বলল, “ইস্রায়েলের সঙ্গে আমাদের লড়াই জারি রযেছে কারণ ওরা মিশর থেকে চলে আসার সময় আমাদের সমস্ত জমিজায়গা কেড়ে নিয়েছে| অর্ণোন নদী থেকে য়ব্বোক নদী এবং যর্দন নদী পর্য়ন্ত আমাদের যত জমি আছে, সব ওরা নিয়ে নিয়েছে| এখন যাও ইস্রায়েলীয়দের গিয়ে বলো, “আমাদের জায়গাগুলো যেন কোনো ঝামেলা না করে ফিরিযে দেয|” |
14
|
দূতরা যিপ্তহর কাছে এই কথা শোনাল| তারপর যিপ্তহ আবার তাদের অম্মোনদের রাজার কাছে পাঠাল| |
15
|
তারা যে বার্তা নিয়ে গেল তা এরকম:যিপ্তহ এই কথা বলেন: ইস্রায়েল মোযাব বা অম্মোনদের কোন জায়গা নেযনি| |
16
|
ইস্রায়েলীয়রা যখন মিশর থেকে চলে আসে তখন তারা মরুভূমিতে ছিল| সেখান থেকে গেল লোহিত সাগরে| তারপর কাদেশে| |
17
|
ইস্রায়েলীয়রা ইদোমের রাজার কাছে দূত পাঠাল| দূতরা সাহায্য চাইল| তারা বলল, “ইস্রায়েলীয়দের তোমাদের দেশের ওপর দিয়ে যেতে দাও|” কিন্তু ইদোমের রাজা আমাদের যেতে দিল না| মোয়াবের রাজার কাছেও আমরা একই রকম বার্তা পাঠালাম| সেও তার দেশের ওপর দিয়ে আমাদের যেতে দিল না| অগত্যা ইস্রায়েলীয়রা কাদেশেই থেকে গেল| |
18
|
তারপর ইস্রায়েলীয়রা মরুভূমি দিয়ে আর ইদোম ও মোযাব দেশের পাশ দিয়ে যেতে লাগল| তারা মোয়াবের পূর্বদিকে গিয়ে অর্ণোন নদীর ওপারে তাঁবু গাড়ল| মোয়াবের সীমানা তারা পেরোল না| মোয়াবের ধারেই অর্ণোন নদী| |
19
|
তারপর ইমোরীয় রাজা সীহোনের কাছে ইস্রায়েলীয়রা দূত পাঠাল| সীহোন ছিল হিষ্বোনের রাজা| দূতেরা সীহোনকে বলল, “তোমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে ইস্রায়েলীয়দের যেতে দাও| আমরা আমাদের দেশে যেতে চাই|” |
20
|
টি শহর জয় করল| তারপর সে আবেল ও করামীম শহরের অম্মোনদের পরাজিত করল| এভাবে ইস্রায়েলীয়রা অম্মোনদের পরাজিত করল| অম্মোনদের মস্ত বড় পরাজয় হল| |
21
|
কিন্তু প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের সহায় ছিলেন, তাই সীহোন ও তার সৈন্যরা পরাজিত হল| তাই ইমোরীয়দের দেশ হল ইস্রায়েলীয়দের সম্পত্তি| |
22
|
তারা ইমোরীয়দের সব জমিজায়গা পেয়ে গেল| দেশটি অর্ণোন নদী থেকে বিস্তৃত হল| তাছাড়া মরুভূমি থেকে যর্দন নদী পর্য়ন্ত দেশটা বড় হয়ে গেছে| |
23
|
প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর নিজে ইমোরীয়দের তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন| সেই দেশ তিনি ইস্রায়েলীয়দের হাতে তুলে দিলেন| তোমরা কি মনে করো ইস্রায়েলীয়দের তোমরা দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে? |
24
|
অবশ্যই তোমাদের দেবতা কমোশ তোমাদের জন্যে যে দেশ দিয়েছেন সেখানে তোমরা থাকতে পারো| এবং আমরাও আমাদের প্রভু ঈশ্বরের দেওয়া ভূখণ্ডে থাকব| |
25
|
তুমি কি সিপ্পোরের পুত্র বালাকের চেয়ে উত্কৃষ্ট? বালাক ছিল মোয়াবের রাজা| সে কি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে তর্ক করেছিল? সে কি বস্তুত তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল? |
27
|
ইস্রায়েলীয়রা তোমাদের কাছে কোনো অপরাধ করে নি| অথচ তোমরা তাদের ওপর ঘোর অন্যায করেছ| প্রভুই পরম বিচারক| বয়ং তিনিই বিচার করুন, ইস্রায়েল আর অম্মোনদের মধ্যে কারা ঠিক কাজ করেছে|” |
28
|
অম্মোনের রাজা যিপ্তহর এইসব কথা শুনতে চাইল না| |
29
|
তখন যিপ্তহর ওপর প্রভুর আত্মা ভর করলেন| গিলিয়দ এবং মনঃশি প্রদেশের ভেতর দিয়ে যিপ্তহ হেঁটে গেল| সে গিলিয়দের মিস্পা শহরে পৌঁছাল| সেখান থেকে সে অম্মোনদের দেশে গেল| |
30
|
প্রভুর কাছে যিপ্তহ একটি প্রতিশ্রুতি করেছিল| সে বলেছিল, “যদি অম্মোনদের হারিযে দেবার কাজে তুমি আমাদের সহায় হও, |
31
|
তবে যখন আমি বিজয়ী হয়ে বাড়ী ফিরব তখন আমাকে অভিনন্দন জানাতে যে আমার বাড়ি থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসবে, প্রভুকে আমি তা হোমবলি রূপে উত্সর্গ কব|” |
32
|
যিপ্তহ অম্মোনদের দেশে গেল| তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল; প্রভুর কৃপায় সে জয়লাভ করল| |
33
|
অরোযের শহর থেকে মিন্নীত শহর পর্য়ন্ত যত অম্মোন ছিল যিপ্তহ সকলকে পরাজিত করল| সে |
34
|
যিপ্তহ মিস্পায ফিরে এলো| বাড়ি পৌঁছতেই তাকে দেখবার জন্য তার মেয়ে বেরিয়ে এল| মেয়েটি তবলা বাজিযে নাচছিল| সে ছিল তার একমাত্র মেয়ে| যিপ্তহ তাকে খুব ভালবাসত| য়িপ্তহের আর কোন ছেলেমেয়ে ছিল না| |
35
|
যিপ্তহ যখন দেখল তার মেয়েই বাড়ি থেকে সবচেয়ে আগে বেরিয়ে এসেছে তখন সে শোকে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলল| সে বলল, “হায, ওরে আমার মেয়ে| তুই আমার একি সর্বনাশ করলি! তুই আমায় কি দুঃখ দিলি জানিস না| আমি যে প্রভুর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সে তো ফেলতে পারবে না!” |
36
|
মেয়েটি যিপ্তহকে বলল, “পিতা, প্রভুর কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা তোমায় রাখতেই হবে| যা বলেছ তাই করো| সবচেয়ে বড় কথা প্রভুর কৃপায় তুমি শত্রু অম্মোনদের পরাজিত করেছ|” |
Judges 11:33 English Language Bible Words basic statistical display
COMING SOON ...