সিদিকিয় 21 বছর বযসে যিহূদার রাজা হন| তিনি 11 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন| সিদিকিযের মা হলেন হমুটল| তিনি ছিলেন য়িরমিযের কন্যা| লিব্না নামক শহরে হমুটল থাকতেন|
প্রভু জেরুশালেম ও যিহূদার প্রতি এত রেগে গেলেন য়ে অবশেষে তিনি তাদের তাঁর সামনে থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন|সিদিকিয় বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন|
সুতরাং সিদিকিযের শাসনের নবমতম বছরের দশম মাসের দশম দিনে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সর জেরুশালেম আক্রমণ করেন| বাবিলের রাজার সঙ্গে তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী ছিল| তারা জেরুশালেমের বাইরে অস্থায়ী শিবির গড়ে| তারপর তারা উঁচু প্রাচীরের মত বাঁধ তৈরী করল যাতে এই প্রাচীরগুলির ওপর উঠে অনায়াসে জেরুশালেমে প্রবেশ করা যায়|
ক্ষুধায পাগল প্রায অবরুদ্ধ শহরবাসীদের ঠিক ঐ সময়ই বাবিলের সৈন্যরা আক্রমণ করল| য়িরমিযর সৈন্যরা রাতের অন্ধকারে দুই প্রাচীরের মধ্যবর্তী প্রবেশদ্বার দিয়ে পালাতে লাগল| বাবিলের সেনারা চারিদিক ঘিরে থাকলেও রাজার বাগানের কাছের গেট দিয়ে জেরুশালেমের সেনারা শহর ছাড়তে থাকে| এই পলায়নরত সেনাদের গন্তব্যস্থল ছিল দূরবর্তী মরুভূমি|
বাবিলের রাজা প্রথমে সিদিকিযের পুত্রকে হত্যা করে| নিজ সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে সিদিকিয়কে| বাবিলের রাজা সিদিকিয়কে তাঁর পুত্রদের হত্যা সাক্ষী হতে বাধ্য করেছিলেন| তিনি যিহূদার রাজকর্মচারীদেরও রিব্লাতে হত্যা করেছিলেন|
এর পর বাবিলের রাজার নির্দেশে সিদিকিযের দুই চোখ উপড়ে নেওয়া হয়| পিতলের চেনে বেঁধে সিদিকিয়কে বাবিলে এনে কারারুদ্ধ করা হয়| মৃত্যুর দিন পর্য়ন্ত সিদিকিয় এই কারাগারেই ছিলেন|
সমস্ত লোকরা যারা জেরুশালেম শহরে বন্দী হয়েছিল, তাদের বাবিল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল| তাছাড়া আগেই যারা আত্মসমর্পণ করেছিল তাদেরও বন্দী করে বাবিলে নিয়ে আসে নবূষরদন| দক্ষ কারিগরদেরও সে বাবিলে আনে|
বাবিলের সেনারা উপাসনালযের পিতলের থাম ভেঙে দেয়| তারা প্রভুর উপাসনাগৃহে খুঁটিগুলি ও পিতলের ট্য়াঙ্কও ভেঙে দেয়| সমস্ত পিতলই তারা বাবিলে বয়ে নিয়ে গিয়েছিল|
রাজার বিশেষ রক্ষীদের নেতা এই সব জিনিসগুলি লুট করে নিয়ে গিয়েছিল: লুণ্ঠিত সামগ্রীর মধ্যে বেসিন, বাতিদান, আগুনের পাত্র, বড় আকারের পাত্র, পেয নৈবেদ্যর সাজ সরঞ্জাম প্রভৃতি উল্লেখয়োগ্য| সে সোনা ও রূপোর তৈরী সমস্ত জিনিসপত্র লুঠ করেছিল|
সে আরো নিয়েছিল: স্তম্ভ দুটি, নীচে 12 টি ষাঁড়সহ সমুদ্রটি এবং অস্থাবর খুঁটিগুলি| এগুলো সব রাজা শলোমন তৈরী করেছিলেন| এটাও সে লুঠ করে| পিতলের তৈরী এই সব জিনিসগুলি এত ভারী ছিল য়ে তা ওজন করা য়েত না|
নবূষরদন ও তারা বিশেষ রক্ষী বাহিনী সরায় এবং সফনিয়কে বন্দী করে| সরায় ছিলেন প্রধান যাজক| সফনিয়র পদ ছিল পরবর্তী উচ্চতম যাজক| উপাসনালযের তিন দ্বাররক্ষীও বন্দী হয়|
বিশেষ রক্ষীক্টবাহিনীর প্রধান যুদ্ধরত লোকদের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বন্দী করল| রাজার সাত উপদেষ্টা বন্দী হয়| 60 জন সাধারণ লোকসহ এক জন লেখক যিনি লোকদের সেনাবিভাগে দেবার ভারপ্রাপ্ত ছিলেন, সবাই বন্দী হয়েছিল| সমস্ত বন্দীদের জেরুশালেম থেকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল|
বন্দীদের নিয়ে নবূষরদন রিব্লা শহরে আসে| রিব্লা হমাত্ দেশে অবস্থিত| এই শহরেই বাবিলের রাজা অবস্থান করছিলেন| রাজার নির্দেশে সমস্ত বন্দীদের হত্যা করা হয়| একই ভাবে যিহূদা থেকে লোকেদের বন্দী করে এনে হত্যা করা হল|তাই, যিহূদার লোকদের তাদের দেশ থেকে নির্বাসন দেওয়া হল|
রাজা নবূখদ্রিত্সরের ত্রযোবিংশতিতম বছরের রাজত্বের সময় নবূষরদন যিহূদা থেকে 745 জনকে বন্দী করে আনেন|মোট 4,60 0 মানুষ বন্দী হয়েছিল রাজার এই নির্দেশে| এদের বন্দী করেছিল বিশেষ রক্ষীবাহিনীর নেতা নবূষরদন|
যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন 37 বছর বাবিলের কারাগারে বন্দী ছিল| যিহোয়াখীনের কারাবাসের সাঁইত্রিশতম বর্ষে বাবিলের রাজা ইবিল মরোদক করুণা করে তাকে মুক্তি দেন| তিনি দ্বাদশ মাসের 25 তম দিনে যিহোয়াখীনকে মুক্তি দেন| ইবিল ঐ বছরেই বাবিলের রাজা হয়েছিল|
রাজা ইবিল-মরোদক যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের প্রতি দযাপরবশ হয়ে ভাল ব্যবহার করেন| অন্য রাজারা যারা তাঁর সঙ্গে বাবিলে ছিল, তাদের তুলনায় যিহোয়াখীনকে উচ্চতর পদে সম্মানিত করেছিলেন|