তিনি স্বপ্নে যা দেখে ছিলেন তা লিখে রাখলেন এবং তার সারমর্ম বললেন| তিনি বললেন: “আমি রাত্রে একটি স্বপ্ন দেখেছি| ঐ স্বপ্নে চারি দিক থেকে জোরে হাওয়া বইছিল এবং সমুদ্রকে অশান্ত করে তুলেছিল|
“প্রথম জন্তুটিকে সিংহের মতো দেখতে আর তার ঈগলের মতো ডানা ছিল| আমি যখন তাকিয়ে ছিলাম, তার ডানাগুলি টেনে তুলে ফেলা হল| জন্তুটিকে মাটি থেকে তোলা হল এবং তাকে মানুষের মত দুপায়ের ওপর দাঁড় করানো হল| এবং তাকে একটি মানুষের মন দেওয়া হল|
“তারপর আমি দ্বিতীয় জন্তুটিকে দেখতে পেলাম যাকে দেখতে ভালুকের মতো| তাকে তার পেছনের পায়ের ওপর তোলা হল এবং তার মুখের মধ্যে দাঁতের ফাঁকে তিনটি পঞ্জরাস্থি ছিল| তাকে বলা হল, ‘চালিয়ে যাও, তোমার যত ইচ্ছে মাংস খাও!’
“তারপর আমি আমার সামনে আরেকটি জন্তুর দিকে তাকালাম| এটি ছিল একটি চিতা বাঘের মতো দেখতে কিন্তু এর পিঠে চারটি ডানা ছিল| ডানাগুলি ছিল পাখির ডানার মতো এবং জন্তুটির চারটি মাথাও ছিল| একে কর্ত্তৃত্ব করার ক্ষমতা দেওয়া হল|
“তারপর, আমি আমার স্বপ্ন দর্শনে চতুর্থ জন্তুটিকে দেখলাম| এই জন্তুটি ছিল বিভীষিকাময়, ভয়ঙ্কর এবং ভীষণ শক্তিশালী| এটির ছিল বড় বড় লোহার দাঁত| এই জন্তুটি তার শিকারকে পিষে ফেলে খেয়ে নিল এবং তার শিকারের যা কিছু অবশিষ্ট ছিল তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিল| এই চতুর্থ জন্তুটি আমার দেখা সমস্ত জন্তুর চেয়ে আলাদা ছিল| এরও দশটি শিং ছিল|
“আমি যখন ঐ শিংগুলিকে কাছ থেকে দেখছিলাম, ঐ শিংগুলির মধ্যে আরেকটি শিং গজিয়ে উঠল| এই শিংটি ছোট ছিল এবং এতে মানুষের চোখ ছিল| এই শিংটির একটি মুখ ছিল, য়েটি দম্ভ প্রকাশ করে যাচ্ছিল| ওই শিংটি আরও তিনটি শিংকে উপড়ে ফেলল|
“আমি তাকিয়ে থাকা-কালীন, কয়েকটি সিংহাসন রাখা হল| এক জন প্রাচীন রাজা সিংহাসনে বসলেন| তাঁর পোশাক ছিল তুষার শুভ্র| তাঁর মাথার চুল ছিল মেষ শাবকের পশমের মত সাদা| তাঁর সিংহাসন ছিল আগুনের তৈরী এবং সিংহাসনের চাকাগুলি ছিল অগ্নিশিখা থেকে বানানো|
সেই প্রাচীন রাজার সামনে দিয়ে এক আগুনের নদী বয়ে যাচ্ছিল| লক্ষ লক্ষ লোক তাঁকে সেবা করছিল এবং কোটি কোটি লোক তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিল| রাজসভা শুরু হতে যাচ্ছিল এবং বইগুলি খোলা ছিল|
“যতক্ষণ আমি লক্ষ্য করছিলাম, ছোট শিংটি দম্ভ প্রকাশ করছিল| আমি দেখতেই থাকলাম যতক্ষণ না ঐ চতুর্থ জন্তুটিকে হত্যা করে তার শরীরকে বিনষ্ট করা হল এবং জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করা হল|
“আমি রাত্রে য়ে স্বপ্নদর্শন করলাম তাতে মানুষের মতো দেখতে এক ব্যক্তি আমার সামনে এলেন| তিনি আকাশের মেঘের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে সেই প্রাচীন রাজার কাছে এলেন এবং তারা তাঁকে তাঁর সামনে নিয়ে এলো|
“সেই মানুষের মতো ব্যক্তিটিকে কর্ত্তৃত্ব, মহিমা ও সম্পূর্ণ শাসন ক্ষমতা দেওয়া হল| সমস্ত দেশ ও সমস্ত ভাষার লোকরা তাঁর উপাসনা করবে| তাঁর শাসন ও রাজত্ব চিরস্থায়ী হবে| তা কখনো ধ্বংস হবে না|
“তখন আমি জানতে চেয়েছিলাম চতুর্থ জন্তুটি কি ও তার অর্থ কি? চতুর্থ জন্তুটি ছিল সমস্ত জন্তুর থেকে ভিন্ন| ওটা ছিল ভয়ঙ্কর| এই জন্তুটির ছিল লোহার দাঁত ও পিতলের নখ| এই জন্তু তার শিকারকে পিষে ফেলে খেয়ে নিত এবং শিকারের অবশিষ্ট ভাগের ওপর দিয়ে মাড়িয়ে চলে য়েত|
এবং আমি ঐ চতুর্থ জন্তুটির মাথার দশটি শিং-এর কথা জানতে চেয়েছিলাম| আমি ঐ ছোট শিংটির ব্যাপারে জানতে চেয়ে ছিলাম য়েটি পরে গজিযে উঠেছিল এবং তিনটি শিংকে উপড়ে ফেলেছিল| এই ছোট শিংটির চক্ষুসমূহ ছিল এবং একটি মুখ ছিল য়েটি সারাক্ষণ দম্ভ প্রকাশ করত| এটি অন্যদের চেয়ে ভয়ঙ্কর দেখতে ছিল|
এটা চলতে লাগল যতক্ষণ না প্রাচীন রাজা এলেন এবং ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের স্বপক্ষে রায় দিলেন| প্রাচীন রাজার ঘোষিত বিচার তাঁর বিশেষ লোকদের তাদের রাজত্ব পেতে সাহায্য করল|
এই রাজা পরাত্পরের বিরুদ্ধে বলবে এবং ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের নির্য়াতন করবে| এই রাজা নিরূপিত সময়ের এবং ব্যবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করবে| ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা ঐ রাজার অধীনে