1
|
যিহোশাফট প্রভুত পরিমাণে সম্পদ ও সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন| তিনি ঐ দুটি রাজ্যের মধ্যে একটি সন্ধি স্থাপনের জন্য রাজা আহাবের সঙ্গেও একটি ব্বৈাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন| |
2
|
কযেকবছর পরে যখন তিনি শমরিয়া শহরে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আহাব তাঁর ও তাঁর সঙ্গের লোকদের সম্মানার্থে বহু মেষ ও গরু বলিদান করেন| আহাব যিহোশাফটকে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে উত্সাহ দিয়েছিলেন| |
3
|
আহাব যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি আমার সঙ্গে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে যাবেন?” যিহোশাফট, আহাবকে উত্তর দিয়েছিলেন, “আপনার আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য় নেই, আমার প্রজারা তো আপনারও প্রজা| আমরা অবশ্যই আপনার সঙ্গে যুদ্ধে য়োগ দেব|” |
4
|
যিহোশাফট আরো বললেন, “প্রথমে প্রভুর সন্মতি চাওযা যাক|” |
5
|
রাজা আহাব তাই 400 জন ভাব্বাদীকে জড়ো করলেন| তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা কি রামোত্-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?” তখন ভাব্বাদীরা বললেন, “যান ঈশ্বর আপনাদের রামোত্-গিলিয়দকে হারাতে সাহায্য করবেন|” |
6
|
কিন্তু যিহোশাফট একথায় সন্তুষ্ট না হয়ে বললেন, “আমার প্রভুর কোনো ভাব্বাদী কি এখানে উপস্থিত আছেন? তাহলে তাঁর মাধ্যমে আমাদের প্রভুর সম্মতি নেওয়া উচিত্ |” |
7
|
তখন রাজা আহাব যিহোশাফটকে জানালেন, “একজন আছেন য়াঁর মাধ্যমে আমরা প্রভুকে রশ্ন করতে পারি| কিন্তু এই লোকটাকে আমার মোটেই পছন্দ নয় কারণ ও কখনও প্রভুর কাছ থেকে জেনে আমায় কোনো ভাল কথা বলেনি| ও সবসময় আমার সম্পর্কে খারাপ ভবিষ্যদ্বাণী করে| এ হল য়িম্লের পুত্র মীখায়|” যিহোশাফট বললেন, “আহাব আপনার মুখে একথা শোভা পায় না|” |
8
|
রাজা আহাব তখন তাঁর এক কর্মচারীকে ডেকে বললেন, “তাড়াতাড়ি গিয়ে য়িম্লের পুত্র মীখায়কে এখানে ডেকে নিয়ে এসো” |
9
|
ইস্রাযেলরাজ আহাব এবং যিহূদারাজ যিহোশাফট দুজনেই তখন তাঁদের রাজকীয পোশাক পরে শমরিয়া শহরের সামনের দরজার কাছে এক শস্য মাড়াইযের জায়গায় নিজেদের সিংহাসনে বসেছিলেন| ঐ 400 জন ভাব্বাদী তাদের সামনে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন| |
10
|
কনানার পুত্র সিদিকিয লোহা দিয়ে কযেকটা শিং বানিয়ে বলল, “প্রভু বলেছেন: ‘ধ্বংস না হওয়া পর্য়ন্ত আপনারা অরামীয়দের এই শিংগুলি দিয়ে বিদ্ধ করে যাবেন|”‘ |
11
|
সমস্ত ভাব্বাদীরা একই সুরে কথা বলতে লাগলেন| তারা বললেন, “আপনারা রামোত্-গিলিয়দে যান| প্রভুর সহায়তায আপনারা নিশ্চয়ই অরামীয়দের পরাজিত করতে পারবেন|” |
12
|
এদিকে বার্তাবাহকরা মীখায়কে গিয়ে বললেন, “শুনুন মীখায়, সমস্ত ভাব্বাদীরা রাজাদের যুদ্ধ জয়ের কথা শুনিয়েছেন| আপনিও এবার গিয়ে ভাল ভাল কথা বলুন|” |
13
|
প্রত্যুত্তরে মীখায় বললেন, “জীবন্ত প্রভুর দিব্য, আমার ঈশ্বর যা বলেন আমি তাই বলব|” |
14
|
তারপর মীখায় রাজা আহাবের কাছে এসে উপস্থিত হলেন| রাজা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “মীখায় আমরা কি রামোত্-গিলিয়দে যুদ্ধ করতে যেতে পারি?” মীখায় উত্তর দিলেন, “যান আক্রমণ করুন| ঈশ্বর আপনাদের শএুকে পরাজিত করতে সাহায্য করবেন|” |
15
|
রাজা আহাব তখন মীখায়কে বললেন, “বহুবার আমি তোমাকে বলেছি, প্রভুর নামে আমাকে সব সমযে সত্যি কথা বলবে!” |
16
|
একথা শুনে মীখায় বললেন, “আমি দেখলাম ইস্রায়েলের লোকরা মেষপালক ছাড়া মেষের পালের মত পাহাড়গুলোর ওপর ছড়িয়ে পড়েছে| প্রভু বলেছেন: ‘এদের নেতৃত্ব দেবার মতো কেউ নেই, প্রত্যেকে যে যার বাড়িতে ফিরে যাক|”‘ |
17
|
ইস্রায়েলের রাজা আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “দেখেছেন, আমি আগেই আপনাকে বলেছিলাম মীখায় কখনও আমার সম্পর্কে ভাল কিছু বলেন না| শুধুই আমার অপবাদ দেন|” |
18
|
মীখায় বললেন, “প্রভুর বার্তা শুনুন| আমি প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখেছি আর স্বর্গের সেনাবাহিনী তাঁকে দুদিকে ঘিরে রেখেছিল| |
19
|
প্রভু জিজ্ঞেস করলেন: ‘তোমাদের মধ্যে কে রামোত্-গিলিয়দে যাবে এবং আহাবকে প্রতারণা করে হত্যা করবে?’ তখন প্রভুর চারপাশে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তাদের একেকজন একেক রকম কথা বলতে লাগলেন| |
20
|
শেষ অবধি এক আত্মা এসে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে বললো, ‘আমি যাবো আহাবের সঙ্গে ছলনা করতে|’ প্রভু সেই আত্মাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি ভাবে?’ |
21
|
তখন সেই আত্মা বললো, ‘আমি যাবো এবং আহাবের ভাব্বাদীদের ভর করব এবং তাদের দিয়ে মিথ্য়া ভবিষ্যদ্বাণী করাব|’ তখন প্রভু বললেন, ‘যাও আহাবকে ছলনা করার কাজে তুমি অবশ্যই সফলকাম হবে|’ |
22
|
“দেখুন আহাব, প্রভু আপনার ভাব্বাদীদের মুখ দিয়ে মিথ্য়া ভাষণ করিযেছেন| আসলে প্রভু আপনার অমঙ্গল সাধন করতে চান|” |
23
|
তখন কনানার পুত্র সিদিকিয গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “মীখায়, আমাকে বল প্রভুর আত্মা কেমন করে আমাকে ছেড়ে গেল এবং তার বদলে তোমার সঙ্গে কথা বলল?” |
24
|
মীখায় উত্তর দিলেন, “সিদিকিয এ কথার উত্তর তুমি তখন পাবে যখন নিজের প্রাণ বাঁচাতে তোমায একটা চোরা কুঠুরিতে গিয়ে লুকোতে হবে|” |
25
|
রাজা আহাব হুকুম দিলেন, “মীখায়কে আটক কর এবং তাকে শহরের শাসনকর্তা আমোনার কাছে এবং রাজপুত্র যোয়াশের কাছে পাঠিয়ে দাও| |
26
|
আর ওদের জানিয়ে দাও আমি মীখায়কে কারাগারে পুরতে বলেছি| আমি যুদ্ধ থেকে নিরাপদে ফিরে না আসা পর্য়ন্ত যেন ওকে জল আর শুকনো রুটি ছাড়া আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়|” |
27
|
প্রত্যুত্তরে মীখায় বললেন, “আহাব আপনি যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন তাহলে বুঝবো প্রভু কোনোদিনই আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বলেননি| তোমরাও সকলে মন দিয়ে আমার একথা শুনে রাখো|” |
28
|
অতঃপর ইস্রায়েলের রাজা আহাব আর যিহূদার রাজা যিহোশাফট দুজনে মিলে রামোত্-গিলিয়দ আক্রমণ করতে গেলেন| |
29
|
রাজা আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “যুদ্ধে যাবার আগে আমি ছদ্মবেশ পরে যেতে চাই| আপনি আপনার পোশাকেই চলুন|” তখন ইস্রায়েলের রাজা আহাব ছদ্মবেশ ধারণ করলেন এবং তারপর দুজনে যুদ্ধে গেলেন| |
30
|
অরামের রাজা তাঁর রথবাহিনীর সেনাপতিদের আদেশ দিলেন, “কোন সৈন্যর সঙ্গে যুদ্ধ কর না| তোমরা শুধু ইস্রায়েলের রাজা আহাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো|” |
31
|
রথ বাহিনীর সেনাপতিরা প্রথমে যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন, “ঐ বুঝি ইস্রায়েলের রাজা আহাব!” তারা সকলে মিলে যেই যিহোশাফটকে আক্রমণ করতে গেল যিহোশাফট সাহায্যের জন্য প্রভুকে চিত্কার করে ডাকলেন| ঈশ্বর রথের সেনাপতিদের অভিমুখ য়িহোশাফটের দিক থেকে ঘুরিযে দিলেন| |
32
|
যখন রথের সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখল তারা হৃদয়ঙ্গম করল যে তিনি আসলে ইস্রায়েলের রাজা আহাব নন, তাই তারা আর তাঁকে তাড়া করলো না| |
33
|
ইতিমধ্যে, একজন সেনা তার ধনুক থেকে একটা তীর লক্ষ্যহীনভাবে ছুঁড়েছিল এবং সেই তীরটা ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে গিয়ে বিঁধলো| তীরটা তাঁর শরীরের এমন জায়গায় বিঁধল যেখানটা বক্ষত্রাণ দিয়ে ঢাকা ছিল না| আহাব তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “রথের মুখ ঘোরাও এবং আমাকে যুদ্ধ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাও| আমি আহত|” |
34
|
সেদিন যুদ্ধ এমশঃ প্রচণ্ড হয়ে উঠল| সন্ধ্যা পর্য়ন্ত রাজা আহাব তাঁর রথে অধিষ্ঠিত থেকে যুদ্ধের সামনা করলেন| তারপর সূর্য়াস্তের সময় তিনি মারা গেলেন| |
2 Chronicles 18:20 English Language Bible Words basic statistical display
COMING SOON ...