পরে ঐ সপ্ত বাটি যাঁহাদের হস্তে ছিল, সেই সপ্ত দূতের মধ্যে এক জন আসিয়া আমার সঙ্গে আলাপ করিয়া কহিলেন, আইস, “বহু জলের উপরে বসিয়া আছে” যে ঐ মহাবেশ্যা, আমি তোমাকে তাহার বিচারসিদ্ধ দণ্ড দেখাই,
পরে তিনি আত্মাতে আমাকে প্রান্তর মধ্যে লইয়া গেলেন; তাহাতে আমি এক নারীকে দেখিলাম, সে সিন্দূরবর্ণ পশুর উপরে বসিয়া আছে; সেই পশু ধর্ম্মনিন্দার নামে পরিপূর্ণ, এবং তাহার সপ্ত মস্তক ও দশ শৃঙ্গ।
আর সেই নারী বেগুনিয়া ও সিন্দূরবর্ণ বস্ত্র পরিহিতা, এবং সুবর্ণে ও মূল্যবান্ মণিতে ও মুক্তায় মণ্ডিতা, এবং তাহার হস্তে সুবর্ণময় এক পানপাত্র আছে, ইহা ঘৃণার্হ দ্রব্যে ও তাহার বেশ্যাক্রিয়ার মালিন্যে পরিপূর্ণ।
আর সেই দূত আমাকে কহিলেন, তুমি আশ্চর্য্য জ্ঞান করিলে কেন? আমি ঐ নারীর ও উহার বাহনের অর্থাৎ যাহার সপ্ত মস্তক ও দশ শৃঙ্গ, সেই পশুর নিগূঢ়তত্ত্ব তোমাকে জানাই।
তুমি যে পশুকে দেখিলে, সে ছিল, কিন্তু নাই; সে অগাধলোক হইতে উঠিবে ও বিনাশে যাইবে। আর পৃথিবী-নিবাসী যত লোকের নাম জগতের পত্তনাবধি জীবন-পুস্তকে লিখিত হয় নাই, তাহারা যখন সেই পশুকে দেখিবে যে ছিল, এখন নাই, পরে হইবে, তখন আশ্চর্য্য জ্ঞান করিবে।
আর তুমি যে দশ শৃঙ্গ দেখিলে, সে দশ রাজা; তাহারা এ পর্য্যন্ত রাজ্য প্রাপ্ত হয় নাই, কিন্তু এক ঘন্টার নিমিত্তে সেই পশুর সহিত রাজাদের ন্যায় কর্ত্তৃত্ব পাইবে।
তাহারা মেষশাবকের সহিত যুদ্ধ করিবে, আর মেষশাবক তাহাদিগকে জয় করিবেন, কারণ “তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা;” এবং যাঁহারা তাঁহার সহবর্ত্তী, আহূত ও মনোনীত ও বিশ্বস্ত, তাঁহারাও জয় করিবেন।
আর তুমি যে ঐ দশ শৃঙ্গ এবং পশুটা দেখিলে তাহারা সেই বেশ্যাকে ঘৃণা করিবে, এবং তাহাকে অনাথা ও নগ্না করিবে, তাহার মাংস ভক্ষণ করিবে, এবং তাহাকে আগুনে পোড়াইয়া দিবে।
কেননা ঈশ্বর তাহাদের হৃদয়ে এই প্রবৃত্তি দিয়াছিলেন, যেন তাহারা তাঁহারই মানস পূর্ণ করে, এবং একমনা হয়; আর যে পর্য্যন্ত ঈশ্বরের বাক্য সকল সিদ্ধ না হয়, সেই পর্য্যন্ত আপন আপন রাজ্য সেই পশুকে দেয়।