যাকোব বলল, “আমি তোমার বড় পুত্র এষৌ| তুমি য়েমন বলেছিলে আমি সব তেমনভাবে করে এনেছি| এখন উঠে বসো, তোমার জন্যে যা শিকার করেছি, খাও আগে| আমায় পরে আশীর্বাদ কোরো|”
কিন্তু ইস্ হাক তাঁর পুত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি করে এত তাড়াতাড়ি জানোয়ার শিকার করলে?”যাকোব উত্তর দিল, “কারণ প্রভু, তোমার ঈশ্বর আমাকে জানোয়ারগুলি তাড়াতাড়ি খুঁজে পেতে সাহায্য করেছেন|”
তখন ইসহাক বললেন, “আমাকে আমার পুত্রের শিকার করা পশুগুলির থেকে খাবার এনে দাও| আমি সেটা খেয়ে তোমায় আশীর্বাদ করবো|” তখন যাকোব খাবারটা দিল এবং ইসহাক তা খেলেন| তারপর যাকোব কিছু দ্রাক্ষারস দিলে ইসহাক তা পান করলেন|
সুতরাং যাকোব তার পিতার কাছে গিয়ে তাঁকে চুম্বন করল| তখন ইসহাক যাকোবের জামা কাপড়ে এষৌর জামা কাপড়ের গন্ধ পেল এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন| ইসহাক বললেন,“য়ে প্রান্তর প্রভুর আশীর্বাদ ধন্য, আমার সন্তান সেই প্রান্তরের গন্ধ বহে|
তুমি সকলের সেবা পাবে| বহু জাতি তোমায় সেবা করবে এবং তোমার প্রতি নত থাকবে| ভাই জাতিদের ওপরে তোমার প্রভুত্ব বহাল হবে| তোমার মাতার পুত্রগণ তোমার অধীন হবে এবং তারা তোমার আদেশে চলবে| তোমাকে যারা শাপ দেবে তারা হবে অভিশপ্ত, যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে তারা আশীর্বাদ পাবে|”
পিতা ঠিক য়েমন খেতে ভালবাসে ঠিক সেভাবে এষৌ মাংস রাঁধল| তারপর খাবারটা নিয়ে এল পিতার কাছে| পিতাকে সে বলল, “পিতা, আমি তোমার পুত্র| ওঠো, তোমার জন্যে শিকার করে আমি মাংস রেঁধে নিয়ে এসেছি, খাও, তারপরে আমায় আশীর্বাদ করো|”
তখন ইসহাক মহা উদ্বিগ্ন হলেন| জিজ্ঞেস করলেন, “তাহলে তুমি আসার আগে কে মাংস রান্না করে এনে দিল আমায়? আমি সমস্ত মাংস খেয়ে তাকে আশীর্বাদ করলাম| এখন সেই আশীর্বাদ ফিরিযে নেওয়ার পক্ষেও ঢ়েব দেরী হয়ে গেছে|”
এষৌ বলল, “তার নাম যাকোব| ওর জন্যে ঐ নামই ঠিক| আমার সঙ্গে ভাই দুবার চালাকি করল| প্রথমবার কৌশলে সে প্রথম সন্তান হিসেবে আমার যা অধিকার ছিল তার থেকে বঞ্চিত করেছে এবং এবার আমার প্রাপ্য আশীর্বাদ থেকে আমাকে বঞ্চিত করল|” তারপর এষৌ জিজ্ঞেস করল, “আমার জন্যে কি তোমার আর কোন আশীর্বাদ অবশিষ্ট নেই?”
ইসহাক উত্তর দিলেন, “না, তার জন্যে বড় দেরী হয়ে গেছে| আমি তোমায় শাসন করার অধিকারও যাকোবকে দিয়ে ফেলেছি| আমার আশীর্বাদে সে পাবে তার সমস্ত ভাইদের সেবা| আর আমি তাকে প্রচুর শস্য আর দ্রাক্ষারসের জন্যে আশীর্বাদ দিয়েছি| তোমায় আশীর্বাদ করার জন্যে আর কিছু বাকি নেই|”
তারপর এই আশীর্বাদের জন্যে এষৌ যাকোবকে ঘৃণা করতে শুরু করল| মনে মনে এষৌ ভাবল, “আমার পিতা শীঘ্রই মারা যাবেন| তার জন্য শোক করার সময় শেষ হবার পরে আমি যাকোবকে হত্যা করব|”
কিছুদিন পরে তোমার ভাই, তুমি তার প্রতি কি করেছ না করেছ সব ভুলে যাবে| তখন আমি তোমায় ফিরিযে আনার জন্যে একটি ভৃত্য পাঠাব| আমি একই দিনে আমার দু পুত্রকে হারাতে চাই না|”
তারপর রিবিকা ইসহাককে বললেন, “তোমার পুত্র এষৌ হিত্তীয়দের কন্যাকে বিয়ে করেছে| এ আমার মোটে ভাল লাগে নি| কেননা তারা আমাদের আপনজন নয়| যাকোবও যদি ঐ মেয়েদের কাউকে বিয়ে করে তাহলে আমি নির্ঘাত মারা যাব|”