এছাড়াও তিনি “লিবানোনের বাগান” নামে একটি বাড়ি বানিয়েছিলেন| এই বাড়ীটির দৈর্ঘ্য ছিল 100 হাত, প্রস্থ 50 হাত ও উচ্চতা 30 হাত| বাড়ীটায এরস কাঠের চারসারি স্তম্ভ ছিল| স্তম্ভগুলির মাথায় কাঠের আচ্ছাদন ছিল|
স্তম্ভের শীর্ষভাগে ছিল সারি সারি কড়ি বর্গা| আর তার ওপর ছাদের জন্য এরস তক্তা বসানো হয়েছিল| একেকটি স্তম্ভের ওপর 15টি কড়ি মিলিয়ে মোট 45টি কড়ি বসানো ছিল|
শলোমনের নিজের বাসগৃহটি এই বিচারকক্ষের ভেতরে ছিল| এই গৃহটি বিচারকক্ষের মতোই ছিল| তিনি তাঁর স্ত্রী, মিশরের রাজার মেয়ের জন্যও একই রকম একটা গৃহ বানিয়ে দিয়েছিলেন|
প্রত্যেকটি বাড়ী মূল্যবান পাথরে তৈরী হয়েছিল| বিশেষ এক ধরণের করাতের সাহায্যে প্রথমে পাথরগুলোকে সঠিক মাপে সামনে ও পেছনে কেটে নেওয়া হত| একেবারে বাড়ির ভিত থেকে দেওয়ালের মাথা পর্য়ন্ত এইসব দামী পাথর বসানো হত| এমনকি উঠোনের চারপাশের দেওয়ালগুলোও এই সমস্ত দামী পাথরে বানানো হয়েছিল|
হীরমের মা ছিলেন নপ্তালির এক ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর মহিলা| তাঁর মৃত পিতা ছিলেন সোরের বাসিন্দা| হীরম ছিল পিতলের জিনিসপত্রের দক্ষ কারিগর| এ কারণেই শলোমন হীরমকে ডেকে পাঠিয়ে পিতলের কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন| যা কিছু পিতলের কাজ সে সবই হীরম করেছিল|
ফলতঃ স্তম্ভগুলির সওযা হাত থেকে 5 হাত পর্য়ন্ত লম্বা শিখরগুলি ফুলের মত দেখতে লাগল| স্তম্ভ চূড়াগুলো স্তম্ভের উপর বাটির মত দেখতে জালে বসানো হয়েছিল| ওখানে স্তম্ভ চূড়াগুলোর চার পাশে
ঠেলার চারপাশে এবং কাঠামোর গায়ে সিংহ, তালগাছ, করূব দূত ইত্যাদির ছবি খোদাই করা ছিল| গোটা ঠেলার যেখানেই জায়গা ছিল সেখানেই এই সব খোদাই করে দেওয়া হয়| আর ঠেলার চতুর্দিকে ফুলের নকশা খোদাই করে দেওয়া হয়েছিল|
এছাড়াও হীরম প্রত্যেকটা ঠেলার জন্য একটা করে মোট 10টি বড় বাটি বানিয়েছিল| য়েগুলো প্রায় 4 হাত করে চওড়া ছিল এবং এই পাত্রগুলোয 230 গ্য়ালন পর্য়ন্ত পানীয় ধরত|
এছাড়াও শলোমনের নির্দেশ মতো অজস্র পাত্র, ছোট হাতা, ছোট বাটি যা কিছু তাকে বানাতে বলা হয়েছিল সে বানিয়েছিল| প্রভুর মন্দিরে হীরম যা কিছু বানিয়েছিল তার তালিকা দেওয়া হল:2টি স্তম্ভ, স্তম্ভের ওপরে বসানোর জন্য বাটির মতো দেখতে2টি স্তম্ভ চূড়া, গম্বুজগুলো ঘেরার জন্য2টি জাল, জালে লাগানোর জন্য400টি ডালিম| প্রতিটি জালের জন্য 2 সারি ডালিম ছিল যাতে স্তম্ভগুলির মাথার ওপরের গম্বুজ ঢাকা পড়ে, একটা বাটি সহ 10টি ঠেলা, একটি বড় চৌবাচ্চা যার নীচে ছিল 12টি ষাঁড়, ছোট হাতা, ছোটখাটো পাত্র ও প্রভুর মন্দিরের জন্য রয়োজনীয় অন্যান্য বাসনকোসন|শলোমন যা যা চেয়েছিলেন, হীরম তার সবই বানিয়ে দিয়েছিল চক্চকে পিতল দিয়ে|
পিতল দিয়ে এতো বেশী জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল য়ে শলোমন কখনও এসব ওজন করার চেষ্টা করেন নি| শলোমন এসবই য়র্দ্দন নদীর সুক্কোত্ ও সর্ত্তনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন| এই সব জিনিসই পিতল গলিযে ছাঁচে ঢেলে বসানো হয়|
শলোমন তাঁর মন্দিরের জন্য অনেক জিনিসই সোনা দিয়ে বানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন| মন্দিরের য়েসব জিনিস শলোমন সোনা দিয়ে বানিয়েছিলেন সেগুলো হল:সোনার বেদী,একটি সোনার টেবিল (যার ওপরে সাজিযে ঈশ্বরকে রুটির নৈবেদ্য দেওয়া হত),পবিত্রতম স্থানের উত্তর ও দক্ষিণে পাঁচটি পাঁচটি করে মোট 10টি বাতিদান,পবিত্রতম স্থানের উত্তর ও দক্ষিণের জন্য 5টি করে চিমটে, সোনার বাটি,কব্জাসমূহ, ছোট বাটি, পবিত্রতম স্থান ও মূল ঘরটির দরজার জন্য সোনার কপাট|
এমনি করে শেষ পর্য়ন্ত শলোমন প্রভুর মন্দিরের জন্য যা যা করতে চেয়েছিলেন সেই কাজ শেষ হল| এরপর তাঁর পিতা রাজা দায়ূদ মন্দিরের জন্য য়ে সব জিনিস তাঁর কোষাগারে রেখে দিয়েছিলেন, শলোমন সেই সমস্ত জিনিস মন্দিরে নিয়ে এলেন| সোনা ও রূপো তিনি প্রভুর মন্দিরের কোষাগারে তুলে রাখলেন|