এক সময়ে ঈষেবল প্রভুর সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করতে শুরু করেছিলেন| ওবদিয 100 জন ভাববাদীকে দুটি গুহার মধ্যে 50 ভাগের দুটি দলে লুকিয়ে রেখে ছিলেন এবং নিয়মিত তাদের খাবার ও জল এনে দিতেন|
তখন ওবদিয বলল, “আমি যদি আহাবকে বলি য়ে আপনি কোথায আছেন আমি জানি তাহলে আহাব আমাকে মেরে ফেলবেন| প্রভু আমি তো আপনার কাছে কোনো অপরাধ করি নি, তাহলে আপনি কেন আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন?”
রাজা পাগলের মতো উন্মত্ত হয়ে প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, চতুর্দিকে আপনার খোঁজে লোক পাঠিয়েছেন| প্রত্যেকটা দেশে তিনি আপনাকে খুঁজতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন এবং সেখানে আপনাকে পাওয়া না গেলে আহাব সেখানকার শাসকদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায করেছেন, য়ে সত্যি সত্যিই আপনি সেই সব দেশে নেই|
আমি গিয়ে রাজা আহাবকে একথা বলার পর, রাজা যখন আপনাকে খুঁজতে আসবেন তখন হয়তো প্রভু আপনাকে অন্য কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখবেন আর আপনাকে খুঁজে না পেয়ে রাজা আমাকেই তখন হত্যা করবেন| আমি সেই ছোটবেলা থেকে প্রভুকে অনুসরণ করে চলেছি|
আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কি করেছিলাম| ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদীদের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের 50 জন করে দুভাগে মোট 100 জন ভাববাদীকে দুটো গুহায লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম|
এলিয় উত্তর দিলেন, “আমার জন্য ইস্রায়েলের কোনো দুর্দশাই হয় নি| তুমি ও তোমার পিতৃপুরুষরাই এজন্য দাযী| তোমরা প্রভুর আদেশ অমান্য করে মূর্ত্তির পূজা শুরু করেছ|
এখন ইস্রায়েলের সবাইকে কর্ম্মিল পর্বতে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো| বালদেবের 450 জন ভাববাদী ও রানী ইষেবল সমর্থক আশেরার মূর্ত্তির 400 জন ভাববাদীকেও য়েন ওখানে আনা হয়|”
এলিয় তখন সবাইকে বললেন, “তোমরা কবে স্থির করবে কোন দেবতাকে তোমরা অনুসরণ করবে? শোনো, প্রভুই যদি সত্য ঈশ্বর হন তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো| আর বাল মূর্ত্তিকে যদি তোমাদের প্রকৃত দেবতা বলে মনে হয় তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো|”লোকরা কিছুই বলল না|
এবার দুটো ষাঁড় নিয়ে আসা হোক্| বাল মূর্ত্তির ভাববাদীরা তার একটি কেটে টুকরো টুকরো করে কাঠের ওপর রাখুন| আমি অন্যটাকে কেটে টুকরো করে কেটে কাঠের ওপর রাখছি| আমরা কেউই নিজে থেকে কাঠে আগুন ধরাবো না| আমি আমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছি| বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরাও তাঁদের দেবতার কাছে প্রার্থনা করুন| যার প্রার্থনায সাড়া দিয়ে কাঠে আগুন জ্বলে উঠবে, তার দেবতাই আসল প্রমাণিত হবেন| সমস্ত লোক এই পরিকল্পনায সায় দিল|
এলিয় তখন বাল মূর্ত্তির ভাববাদীদের ডেকে বললেন, “আপনারা সংখ্যায় অনেক| আপনারাই প্রথম যান| য়ে ভাবে বললাম ষাঁড়টাকে কেটে ঠিক করুন| তবে আগুন জ্বালাবেন না|”
তখন বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরা তাঁদের য়ে ষাঁড়টি দেওয়া হয়েছিল সেটাকে কথা মতো কেটে সাজালেন| তারপর তাঁরা বেলা দুপুর পর্য়ন্ত বাল মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা করলেন, তাঁদের বানানো য়জ্ঞবেদী ঘিরে নাচানাচি করলেন কিন্তু কেউ তাঁদের প্রার্থনায সাড়া দিল না, আগুন জ্বললো না|
দুপুর গড়িযে গেলে এলিয় এই সব ভাববাদীদের নিয়ে রসিকতা শুরু করলেন| এলিয় বললেন, “বাল যদি সত্যি সত্যিই দেবতা হন, তাহলে একটু জোরে প্রার্থনা করা উচিত্! হয়তো উনি এখন ভাবনায ডুবে আছেন! কিম্বা হয়তো ঘুম লাগিয়েছেন| না না! আপনাদের আরেকটু জোরে হাঁকডাক করে ওঁকে ঘুম থেকে তোলা দরকার|”
একথা শুনে এই সব ভাববাদীরা তারস্বরে প্রার্থনা করতে লাগলেন| ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করে রক্ত বের করে ফেললেন| (বালদেবের আরাধনার এটিও একটি বিশেষ প্রক্রিযা ছিল|)
কিন্তু দুপুর থেকে বিকেল গড়িযে গেল তখনও আগুন ধরার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না| ক্রমে বিকেলের বলিদানের সময় ঘনিয়ে এলো, ভাববাদীরা উন্মত্তের মতো ডাকাডাকি করতে লাগলেন কিন্তু বালদেবের দিক থেকে কোনো সাড়াই পাওয়া গেল না|
তারপর ইস্রায়েলের 12 টি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকের নামে একটা করে মোট 12 টি পাথর খুঁজে বের করলেন| যাকোবের 12 জন সন্তানের নামে এই 12 টি পরিবারগোষ্ঠীর নামকরণ হয়েছিল| যাকোবকেই প্রভু ইস্রায়েল বলে ডেকেছিলেন|
তখন বৈকালিক বলিদানের সময়| ভাববাদী এলিয় বেদীর কাছে গিয়ে প্রার্থনা করলেন, “প্রভু অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আহ্বান করছি| আপনি এসে প্রমাণ করুন য়ে আপনিই ইস্রায়েলের প্রকৃত ঈশ্বর| এই সব লোককে দেখান য়ে আপনিই আমাকে এসব করবার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন|
এলিয় তখন বললেন, “বাল মূর্ত্তির সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এসো| একটাও য়েন পালাতে না পারে|” তখন সবাই মিলে ঐ সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এল| এলিয় তাদের কীশোনের খাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করলেন.
তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “সমুদ্রের দিকে তাকাও|”সেই ভৃত্য তখন য়েখান থেকে সমুদ্র দেখা যায় সেখানে গেল| সে ফিরে এসে বলল, “কই কিছু তো দেখতে পেলাম না|” এলিয় তাকে আবার দেখতে পাঠালেন|
পরপর সাত বার একই ঘটনা ঘটার পর সাতবারের বার সেই ভৃত্য এসে বলল, “মানুষের হাতের মুঠোর মতো ছোট্ট এক টুকরো মেঘ দেখলাম সমুদ্রের দিক থেকে আসছে|”এলিয় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “যাও রাজা আহাবকে তাঁর রথ প্রস্তুত করে বাড়িতে য়েতে বলো কারণ এক্ষুনি রওনা না হলে ও বৃষ্টিতে আটকে যাবে|”