গিলিয়দের নিজের স্ত্রীর অনেকগুলো পুত্র| পুত্ররা বড় হয়ে যিপ্তহকে দেখতে পারত না| তারা তাকে শহর ছাড়া করল| তারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির এক কানাকড়িও পাবে না, কারণ তুমি আমাদের মাযের পেটের ভাই নও| তুমি অন্য নারীর সন্তান|”
যিপ্তহ বলল, “বেশ, যদি তোমরা চাও যে আমি গিলিয়দে ফিরে আসি এবং অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি ভালো কথা| প্রভুর সহায়তায যদি আমি জিতি তাহলে আমিই হবো তোমাদের নতুন নেতা|”
অম্মোনদের রাজার কাছে যিপ্তহ কয়েকজন বার্তাবাহক পাঠাল| বার্তাবাহকরা রাজার কাছে এই বার্তা শোনাল, “অম্মোনবাসী আর ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে সমস্যাটা কি? কেন তোমরা আমাদের দেশে যুদ্ধ করতে এসেছ?”
রাজা তাদের বলল, “ইস্রায়েলের সঙ্গে আমাদের লড়াই জারি রযেছে কারণ ওরা মিশর থেকে চলে আসার সময় আমাদের সমস্ত জমিজায়গা কেড়ে নিয়েছে| অর্ণোন নদী থেকে য়ব্বোক নদী এবং যর্দন নদী পর্য়ন্ত আমাদের যত জমি আছে, সব ওরা নিয়ে নিয়েছে| এখন যাও ইস্রায়েলীয়দের গিয়ে বলো, “আমাদের জায়গাগুলো যেন কোনো ঝামেলা না করে ফিরিযে দেয|”
ইস্রায়েলীয়রা ইদোমের রাজার কাছে দূত পাঠাল| দূতরা সাহায্য চাইল| তারা বলল, “ইস্রায়েলীয়দের তোমাদের দেশের ওপর দিয়ে যেতে দাও|” কিন্তু ইদোমের রাজা আমাদের যেতে দিল না| মোয়াবের রাজার কাছেও আমরা একই রকম বার্তা পাঠালাম| সেও তার দেশের ওপর দিয়ে আমাদের যেতে দিল না| অগত্যা ইস্রায়েলীয়রা কাদেশেই থেকে গেল|
তারপর ইস্রায়েলীয়রা মরুভূমি দিয়ে আর ইদোম ও মোযাব দেশের পাশ দিয়ে যেতে লাগল| তারা মোয়াবের পূর্বদিকে গিয়ে অর্ণোন নদীর ওপারে তাঁবু গাড়ল| মোয়াবের সীমানা তারা পেরোল না| মোয়াবের ধারেই অর্ণোন নদী|
তারপর ইমোরীয় রাজা সীহোনের কাছে ইস্রায়েলীয়রা দূত পাঠাল| সীহোন ছিল হিষ্বোনের রাজা| দূতেরা সীহোনকে বলল, “তোমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে ইস্রায়েলীয়দের যেতে দাও| আমরা আমাদের দেশে যেতে চাই|”
প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর নিজে ইমোরীয়দের তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন| সেই দেশ তিনি ইস্রায়েলীয়দের হাতে তুলে দিলেন| তোমরা কি মনে করো ইস্রায়েলীয়দের তোমরা দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে?
তুমি কি সিপ্পোরের পুত্র বালাকের চেয়ে উত্কৃষ্ট? বালাক ছিল মোয়াবের রাজা| সে কি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে তর্ক করেছিল? সে কি বস্তুত তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল?
ইস্রায়েলীয়রা তোমাদের কাছে কোনো অপরাধ করে নি| অথচ তোমরা তাদের ওপর ঘোর অন্যায করেছ| প্রভুই পরম বিচারক| বয়ং তিনিই বিচার করুন, ইস্রায়েল আর অম্মোনদের মধ্যে কারা ঠিক কাজ করেছে|”
তখন যিপ্তহর ওপর প্রভুর আত্মা ভর করলেন| গিলিয়দ এবং মনঃশি প্রদেশের ভেতর দিয়ে যিপ্তহ হেঁটে গেল| সে গিলিয়দের মিস্পা শহরে পৌঁছাল| সেখান থেকে সে অম্মোনদের দেশে গেল|
যিপ্তহ মিস্পায ফিরে এলো| বাড়ি পৌঁছতেই তাকে দেখবার জন্য তার মেয়ে বেরিয়ে এল| মেয়েটি তবলা বাজিযে নাচছিল| সে ছিল তার একমাত্র মেয়ে| যিপ্তহ তাকে খুব ভালবাসত| য়িপ্তহের আর কোন ছেলেমেয়ে ছিল না|
যিপ্তহ যখন দেখল তার মেয়েই বাড়ি থেকে সবচেয়ে আগে বেরিয়ে এসেছে তখন সে শোকে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলল| সে বলল, “হায, ওরে আমার মেয়ে| তুই আমার একি সর্বনাশ করলি! তুই আমায় কি দুঃখ দিলি জানিস না| আমি যে প্রভুর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সে তো ফেলতে পারবে না!”
মেয়েটি যিপ্তহকে বলল, “পিতা, প্রভুর কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা তোমায় রাখতেই হবে| যা বলেছ তাই করো| সবচেয়ে বড় কথা প্রভুর কৃপায় তুমি শত্রু অম্মোনদের পরাজিত করেছ|”