পরে যোষেফ গিয়া ফরৌণকে সংবাদ দিলেন, বলিলেন, আমার পিতা ও ভ্রাতারা আপন আপন গোমেষাদির পাল এবং সর্ব্বস্ব কনান দেশ হইতে লইয়া আসিয়াছেন; আর দেখুন, তাঁহারা গোশন প্রদেশে আছেন।
তাঁহারা ফরৌণকে আরও কহিলেন, আমরা এই দেশে প্রবাস করিতে আসিয়াছি, কারণ আপনার এই দাসদের পশুপালের চরাণী হয় না, কারণ কনান দেশে অতি ভারী দুর্ভিক্ষ হইয়াছে; অতএব বিনয় করি, আপনার এই দাসদিগকে গোশন প্রদেশে বাস করিতে দিউন।
মিসর দেশ তোমার সম্মুখে রহিয়াছে; দেশের উত্তম স্থানে আপন পিতা ও ভ্রাতাদিগকে বাস করাও; তাহারা গোশন প্রদেশে বাস করুক; আর যদি তাহাদের মধ্যে কাহাকেও কাহাকেও কার্য্যদক্ষ লোক বলিয়া জান, তবে তাহাদিগকে আমার পশুপালের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত কর।
যাকোব ফরৌণকে কহিলেন, আমার প্রবাসকালের এক শত ত্রিশ বৎসর হইয়াছে; আমার আয়ুর দিন আল্প ও কষ্টকর হইয়াছে, এবং আমার পিতৃপুরুষদের প্রবাসকালের আয়ুর তুল্য হয় নাই।
মিসর দেশে ও কনান দেশে রৌপ্য ব্যয় হইয়া গেলে মিস্রীয়েরা সকলে যোষেফের নিকটে আসিয়া কহিল, আমাদিগকে খাদ্য দ্রব্য দিউন, আমাদের রৌপ্য শেষ হইয়া গিয়াছে বলিয়া আমরা কি আপনার সম্মুখে মরিব?
আর সেই বৎসর অতীত হইলে দ্বিতীয় বৎসরে তাহারা তাঁহার নিকটে আসিয়া কহিল, আমরা প্রভু হইতে কিছু গোপন করিব না; আমাদের সমস্ত রৌপ্য শেষ হইয়া গিয়াছে, এবং পশুধনও প্রভুরই হইয়াছে; এখন প্রভুর সাক্ষাতে আর কিছুই অবশিষ্ট নাই, কেবল আমাদের শরীর ও ভূমি রহিয়াছে।
আমরা আপন আপন ভূমির সহিত আপনার চক্ষুর্গোচরে কেন মারা যাইব? আপনি ভক্ষ্য দিয়া আমাদিগকে ও আমাদের ভূমি ক্রয় করিয়া লউন; আমরা আপন আপন ভূমির সহিত ফরৌণের দাস হইব; আর আমাদিগকে বীজ দিউন, তাহা হইলে আমরা বাঁচিব, মারা পড়িব না, ভূমিও নষ্ট হইবে না।
তাহাতে যাহা যাহা উৎপন্ন হইবে, তাহার পঞ্চমাংশ ফরৌণকে দিও, অন্য চারি অংশ ক্ষেত্রের বীজের নিমিত্তে এবং আপনাদের ও পরিজনদের ও শিশুগণের খাদ্যের নিমিত্তে তোমাদেরই থাকিবে।
পরে ইস্রায়েলের মরণ দিন সন্নিকট হইল। তখন তিনি আপন পুত্র যোষেফকে ডাকাইয়া কহিলেন, আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাইয়া থাকি, তবে বিনয় করি, তুমি আমার জঙ্ঘার নীচে হস্ত দেও, এবং আমার প্রতি সদয় ও সত্য ব্যবহার কর; মিসরে আমাকে কবর দিও না।