দায়ূদ তাঁর লোকদের তিনটে দলে ভাগ করে দিলেন এবং তারপর তাদের পাঠিয়ে দিলেন| য়োয়াব এক তৃতীয়াংশ লোকর নেতৃত্বে ছিল| য়োয়াবের ভাই সরূযার পুত্র অবীশয অপর একভাগ লোককে নেতৃত্ব দিয়েছিল| এবং গাতের ইত্তয বাকী অংশের নেতৃত্বে ছিল|রাজা দায়ূদ তাঁদের বললেন, “আমিও তোমাদের সঙ্গে যাব|”
কিন্তু লোকরা বলে উঠল, “না! আপনি আমাদের সঙ্গে একদম আসবেন না| কেন? কারণ আমরা যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাই, তাহলে অবশালোমের লোকরা ধর্তব্য়ের মধ্যেই আনবে না| এমনকি, আমাদের অর্ধেক লোক যদি মারাও যায় তাতেও অবশালোমের লোকদের কিছু এসে যাবে না, কিন্তু আপনি আমাদের 10,000 লোকর সমান| তাই আপনার পক্ষে শহরে থাকাই ভাল| তখন আমরা সাহায্য চাইলে আপনি আমাদের সাহায্য করতে পারবেন|”
রাজা তাদের বললেন, “তোমরা যা ভাল বোঝ আমি তাই করব|”তখন রাজা ফটকের একদিকে দাঁড়ালেন| সৈন্যবাহিনী বেরিয়ে গেল| শ’যে শ’যে এবং হাজারে হাজারে সেনাবাহিনী বেরিয়ে এল|
য়োয়াব, অবীশয এবং ইত্তযকে রাজা আদেশ দিলেন| তিনি বললেন, “আমার মুখ চেয়ে তোমরা এই কাজ কর| তরুণ অবশালোমের সঙ্গে সংযত ও ভাল আচরণ কর|”সব লোক দাঁড়িয়ে শুনল যে অধিনাযকের প্রতি অবশালোম সম্পর্কে রাজা আদেশ দিলেন|
এমন হল যে অবশালোম দায়ূদের আধিকারিকদের মুখোমুখি হল| অবশালোম তার খচ্চরের ওপর লাফিযে পড়ে পালাতে চেষ্টা করল| খচ্চরটা একটা বড় ওক গাছের ডালের তলা দিয়ে যেতে চেষ্টা করল| অবশালোমের মাথাটা গাছের ডালে আটকে গেল| খচ্চরটা তলা দিয়ে পালিয়ে গেল| আবশালোম গাছের ডালে ঝুলে রইল|
ব্যক্তিটি য়োয়াবকে বলল, “তুমি আমাকে 1,000 রজত মুদ্রা দিলেও আমি রাজার পুত্রকে আঘাত করার চেষ্টা করতাম না| কেন? কারণ তোমার প্রতি অবীশয এবং ইত্তযের প্রতি রাজার আদেশ শুনেছি| রাজা বলেছেন দেখো, ‘তরুণ অবশালোমকে আঘাত করো না|’
য়োয়াব বলল, “তোমার সঙ্গে এখানে আমি সময় নষ্ট করব না|”অবশালোম তখনও দেবদারু গাছে ঝুলে ছিল এবং তখনও বেঁচ্ছেিল| য়োয়াব তিনটে বর্শা নিয়ে অবশালোমের দিকে ছুঁড়ে দিল| বর্শাগুলি অবশালোমের বুক বিদীর্ণ করে দিল|
তারপর য়োয়াবের লোকরা অবশালোমের দেহটি জঙ্গলের খাদে ফেলে দিল| সেই খাদটি তারা বড় বড় পাথর দিয়ে বুজিযে দিল|সব ইস্রায়েলীয় যারা অবশালোমকে অনুসরণ করছিল তারা পালিয়ে গিয়ে যে যার বাড়ী চলে গেল|
অবশালোমের জীবনকালে রাজার উপত্যকায সে একটা স্তম্ভ তৈরী করেছিল এবং সেটা নিজের নামে নাম দিয়েছিল কারণ সে ভেবেছিল: “আমার নাম রক্ষা করার জন্য আমার কোন সন্তানাদি নেই|” আজও স্তম্ভটিকে “অবশালোমের স্তম্ভ” বলা হয়|
কিন্তু সাদোকের পুত্র অহীমাস আবার য়োয়াবের কাছে অনুরোধ করল, “যা ঘটে গেছে তা নিয়ে চিন্তিত হযো না, আমাকেও ঐ কূশীয়র পিছনে ছুটে যেতে দাও!” য়োয়াব জিজ্ঞাসা করল, “পুত্র, কেন তুমি এই সংবাদ নিয়ে যেতে চাইছ? এই সংবাদের জন্য তুমি কোন পুরস্কার পাবে না|”
অহীমাস উত্তর দিল, “যাই ঘটুক না কেন তা নিয়ে চিন্তা করি না| আমি দায়ূদের কাছে দৌড়ে যাব|”য়োয়াব অহীমাসকে বলল, “ভাল, দায়ূদের কাছে দৌড়ে যাও|”তখন অহীমাস যর্দন উপত্যকার মধ্যে দিয়ে দৌড়লো এবং কূশীয় বার্তাবাহককে অতিক্রম করে গেল|
অহীমাস রাজাকে বলল, “সবই কুশল!” অহীমাস রাজাকে প্রণাম করল এবং তাঁকে বলল, “ আপনার প্রভু, ঈশ্বরের প্রশংসা করুন! হে আমার মনিব, যারা আপনার বিরোধী ছিল প্রভু তাদের পরাজিত করেছেন|”
রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “অবশালোম কেমন আছো?”অহীমাস উত্তর দিল, “য়োয়াব যখন আমাকে পাঠিয়েছিল, আমি একদল লোককে দেখেছিলাম এবং তারা বিভ্রান্ত ছিল| কিন্তু কি ব্যাপারে সে উত্তেজিত তা আমি জানি না|”
রাজা সেই কূশীয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “অবশালোম ভালো আছো তো?”কূশীয়টি উত্তর দিল, “আপনার শত্রুরা এবং সেইসব লোকরা যারা আপনাকে আঘাত করবার চেষ্টা করছে তাদের যেন শাস্তি হয় এবং তাদের ভাগ্য যেন অবশালোমের মত হয় আমি এই কামনা করি|”
তখন রাজা জানতে পারলেন অবশালোম মারা গেছে| রাজা ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়লেন| শহরে সিংহদ্বারের ওপর ঘরে গিয়ে কাঁদলেন| সেই সবচেয়ে ওপর তলায় যেতে যেতে তিনি বিলাপ করে কাঁদতে লাগলেন, “হায অবশালোম! হায আমার পুত্র অবশালোম! তোমার বদলে যদি আমি মরতাম! হাযরে অবশালোম! হায আমার পুত্র!”