আর তিনি লিবানোন অরণ্যের বাটী নির্ম্মাণ করিলেন; তাহার দীর্ঘতা এক শত হস্ত, প্রস্থ পঞ্চাশ হস্ত ও উচ্চতা ত্রিশ হস্ত ছিল, তাহা চারি শ্রেণী এরসকাষ্ঠের স্তম্ভের উপরে স্থাপিত এবং স্তম্ভগুলির উপরে এরসকাষ্ঠের কড়ি বসান ছিল।
আর তিনি স্তম্ভশ্রেণীর এক বারাণ্ডা প্রস্তুত করিলেন, তাহার দীর্ঘতা পঞ্চাশ হস্ত ও প্রস্থ ত্রিশ হস্ত, এবং তাহাদের সম্মুখে আর এক বারাণ্ডা করিলেন, তাহাতেও স্তম্ভশ্রেণী ও তাহার সম্মুখে গোবরাট ছিল।
আর সিংহাসনের যে বারাণ্ডাতে তিনি বিচার করিবেন, সেই বিচারের বারাণ্ডা প্রস্তুত করিলেন, ও মেজিয়ার এক দিক্ অবধি অন্য দিক্ পর্য্যন্ত এরসকাষ্ঠ দ্বারা আচ্ছাদন করিলেন।
আর তাঁহার বাসগৃহ, বারাণ্ডার ভিতরে অন্য প্রাঙ্গণ, সেইরূপ ছিল। আর শলোমন যাঁহাকে বিবাহ করিয়াছিলেন, সেই ফরৌণের কন্যার নিমিত্ত ঐ বারাণ্ডার ন্যায় এক গৃহ নির্ম্মাণ করিলেন।
এই সকল ভিত্তিমূল অবধি আলিসা পর্য্যন্ত ভিতরে ও বাহিরে তক্ষিত প্রস্তরের পরিমাণ অনুসারে করাত দিয়া কাটা বহুমূল্য প্রস্তরে নির্ম্মিত হইয়াছিল, এবং বাহিরে বড় প্রাঙ্গণ পর্য্যন্ত তদ্রূপ হইল।
সে নপ্তালি বংশীয় এক বিধবার পুত্র, এবং তাহার পিতা সোর নগরস্থ এক জন কাংস্যকার, পিত্তলের সমস্ত কর্ম্ম করিতে সে জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিদ্যায় পরিপূর্ণ ছিল; সে শলোমন রাজার কাছে আসিয়া তাঁহার সমস্ত কার্য্য করিল।
এইরূপে সে স্তম্ভ দুইটী নির্ম্মাণ করিল; আর স্তম্ভের উপরিস্থ মাথলা আচ্ছাদন জন্য জালকার্য্যের উপরে বেষ্টন করিতে দুই শ্রেণী নির্ম্মাণ করিল; এবং অন্য মাথলার জন্যও তদ্রূপ করিল।
পরে সে ঐ দুই স্তম্ভ মন্দিরের বারাণ্ডাতে স্থাপন করিল, এবং দক্ষিণ হস্ত স্থাপন করিয়া তাহার নাম যাখীন [তিনি সুস্থির করিবেন] রাখিল, এবং বাম স্তম্ভ স্থাপন করিয়া তাহার নাম বোয়স [ইহাতেই বল] রাখিল।
পরে সে ছাঁচে ঢালা এক গোলাকার সমুদ্র-পাত্র নির্ম্মাণ করিল, তাহা এক কাণা অবধি অন্য কাণা পর্য্যন্ত দশ হস্ত, ও তাহার উচ্চতা পাঁচ হস্ত, এবং তাহার পরিধি ত্রিশ হস্ত ছিল।
আর চারিদিকে কাণার নীচে সমুদ্র-পাত্র বেষ্টনকারী বার্ত্তাকীর শ্রেণী ছিল, প্রত্যেক হস্ত পরিমাণের মধ্যে দশ দশ বার্ত্তাকী ছিল; বার্ত্তাকীর দুই শ্রেণী ছিল, ঐ পাত্র ঢালিবার সময়ে সেই সকল ছাঁচে ঢালা গিয়াছিল।
ঐ পাত্র বারোটী গোরুর উপরে স্থাপিত ছিল; তাহাদের তিনটী উত্তরমুখ, তিনটী পশ্চিমমুখ, তিনটী দক্ষিণমুখ, ও তিনটী পূর্ব্বমুখ ছিল; এবং সমুদ্র-পাত্র তাহাদের উপরে রহিল; তাহাদের সকলের পশ্চাদ্ভাগ ভিতরে থাকিল।
প্রত্যেক পীঠের পিত্তলময় চারি চক্র ও পিত্তলময় আল ছিল, এবং চারি পায়াতে স্থাপিত অবলম্বন ছিল, সেই সকল অবলম্বন প্রক্ষালন-পাত্রের নীচে ঢালা ছিল, এ প্রত্যেকের পার্শ্বে মালা ছিল।
আর মাথলার মধ্যে ও তাহার উপরে তাহার মুখ এক হস্ত, কিন্তু তাহার মুখ বৈঠকের আকৃতির ন্যায় গোল ও দেড় হস্ত পরিমিত; এবং তাহার মুখের উপরেও শিল্পকার্য্য ছিল; এবং তাহার পাটা সকল গোল নয়, চতুষ্কোণ ছিল।
পরে সে পিত্তলময় দশটী প্রক্ষালন-পাত্র নির্ম্মাণ করিল, তাহার প্রত্যেক পাত্রে চল্লিশ বাৎ ধরিত, এবং প্রত্যেক পাত্র চারি হস্ত পরিমিত ছিল; আর ঐ দশটী পীঠের মধ্যে এক এক পীঠের উপরে এক এক প্রক্ষালন-পাত্র থাকিত।
হীরম ঐ সকল প্রক্ষালন-পাত্র, হাতা ও বাটি নির্ম্মাণ করিল। এইরূপে হীরম শলোমন রাজার জন্য সদাপ্রভুর গৃহের যে সকল কর্ম্মে প্রবৃত্ত হইয়াছিল, সে সমস্ত সমাপ্ত করিল;
আর নির্ম্মল স্বর্ণময় ডাবর, কর্ত্তরী, বাটি, চমস ও অঙ্গার-পাত্র; এবং ভিতরের গৃহের অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থানের কবাটের জন্য এবং গৃহের অর্থাৎ মন্দিরের কবাটের জন্য স্বর্ণময় কব্জা করাইলেন।
এইরূপে সদাপ্রভুর গৃহের জন্য শলোমন রাজার কৃত সমস্ত কার্য্য সম্পন্ন হইল। আর শলোমন আপন পিতা দায়ূদের পবিত্রীকৃত দ্রব্য সকল, অর্থাৎ রৌপ্য, স্বর্ণ ও পাত্র সকল আনাইয়া সদাপ্রভুর গৃহস্থিত ধনাগার সমূহে রাখিলেন।